বাংলাদেশের অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মতো সব প্রকার অনলাইন গেমস এবং অ্যাপস অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার।
শনিবার (১৯ জুন) মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এর পক্ষে উপরোক্ত গেমস এবং অ্যাপগুলির ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের আইজি বরাবর ইমেইল যোগে জনস্বার্থে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ গ্রহীতাদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনকে জানাবার জন্য। অন্যথায় জনস্বার্থে হাই হাইকোর্টে রিট দায়ের করে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে নোটিশে জানানো হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ারের মতো গেমগুলিতে বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ, প্রজন্ম হয়ে, পড়ছে মেধাহীন। এসব গেমস যেন যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে টিকটক, লাইকি অ্যাপগুলি ব্যবহার করে দেশের শিশু কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এবং সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারীরা বিভিন্ন গোপনীয় জায়গায় পুল পার্টির নামে অনৈতিক বিনোদন যৌন কার্যক্রমে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়াও সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং বাংলাদেশ থেকে দেশের বাহিরে অর্থ পাচারের ঘটনায়ও টিকটক, লাইকি এবং বিগো লাইভের মাধ্যমে চলছে যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশের এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী, শৃঙ্খলা পরিপন্থী মূল্যবোধের পরিপন্থী। দেশের শিশুরা বিভিন্ন অনলাইন গেমস গুলিতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ বিধায় এই বিষয়টি মনিটর করবার জন্য এবং সময়ে সময়ে শিশুদের জন্য উপযোগী এবং যথাযথ অনলাইন গেমস গুলিকে সুপারিশ করার জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা অত্যন্ত জরুরী।
এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে আইনি নোটিশে বিবাদীদেরকে সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস এবং টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মত ক্ষতিকারক অ্যাপগুলিকে অবিলম্বে অপসারণ করা এবং সকল লিংক বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে। একই সাথে এসব বিষয় মনিটর করবার জন্য এবং শিশুদের উপযোগী যেসব অনলাইন গেমস রয়েছে সেগুলি সুপারিশ করবার জন্য একটি একটি মনিটরিং, ইভালুয়েশন এবং সুপারিশ কমিটি গঠন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিধান অনুযায়ী এইসব অবাঞ্ছিত ক্ষতিকর গেমস এবং অ্যাপগুলিকে অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং উপযোগী সাইবার পদ্ধতি সুনিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিবাদীদের যেটা করতে উনারা ব্যর্থই হয়েছেন।
Development by: webnewsdesign.com