দেশের বাজারে এলপিজির (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত মাসের তুলনায় রবিবার নীলফামারীতে এলপিজি গ্যাসের প্রতিটি সিলিন্ডার (১২ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে।
খুলনার একাধিক সরবরাহকারী, পরিবেশক ও ক্রেতা সূত্রে জানা গেছে, গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সাড়ে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ছিল ৯৫০ টাকা। ইংরেজি নববর্ষ থেকে এটি বিক্রি করছে ১১০০ টাকায়। হোটেলে বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত ৩৫ কেজির গ্যাস দুই হাজার ৬০০ টাকা থেকে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায় এবং তিন হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের ৪৫ কেজি ওজনের গ্যাস এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকায়।
হঠাৎ করেই বোতলজাত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে হোঁচট খাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্রমবর্ধমান ব্যয় বাজেটে বিপাকে পড়ছে নির্ধারিত আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবার।
খুলনার বিক্রেতারা বলছেন, শীতপ্রধান দেশগুলোতে কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশের এলপি গ্যাসের মার্কেটেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রাইভেট সব এলপি গ্যাস কোম্পানির সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্যাসের এ মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খুলনা জেলা এলপি গ্যাস ডিলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শায়ের আহম্মেদ বিটু বলেন, ‘শীতকালে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের চাহিদার বেশির কারণে অধিক মূল্যে গ্যাস কিনতে হচ্ছে; সে কারণে কোম্পানিগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী মার্চ-এপ্রিলে গ্যাসের দাম আবার কমে যাবে।’
রবিবার নীলফামারী জেলা শহরের মড়ালসংঘ মোড়ের চা বিক্রেতা সুলতান ইসলাম বলেন, ‘দোকানে জ্বালানির কাজে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করি। আজকে গ্যাস শেষ হওয়ায় কিনতে গিয়ে দেখি দাম বেড়েছে। যে গ্যাস আগে ৯০০ টাকায় কিনেছিলাম তা আজকে কিনলাম এক হাজার ১০০ টাকায়। এখন জ্বালানির খরচ বাড়ায় লাভ কম হবে।’
জেলা শহরে গ্যাসের খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ‘আমরা পরিবেশকের কাছ থেকে কিনে এনে খুচরা বিক্রি করছি। ১ জানুয়ারি থেকে বেশি দামে কিনছি, তাই আগের তুলনায় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাতে আমাদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়লেও লাভ বাড়েনি।’
এ বিষয়ে জেলা শহরের বসুন্ধরা ও যমুনা এলপিজি গ্যাসের পরিবেশক মেসার্স সামী ইলেকট্রনিকসের মালিক আখতার হোসেন স্বপন বলেন, চলতি মাসের এক তারিখ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বাড়ায় বাড়তি দামে আমাদের উত্তোলন করে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করতে হচ্ছে। এতে আমাদের করার কিছু নেই।
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কথা আমাদের জানানো হয়েছে।’
একই শহরের বসুন্ধরা ও যমুনা এবং ওমেরা এলপিজি গ্যাস কোম্পানির পরিবেশক মেসার্স প্রধান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক মানিক বলেন, ‘১ জানুয়ারি থেকে ১২ কেজি ওজনের বসুন্ধরা এলপিজি গ্যাস কোম্পানির কাছ থেকে ১০৫০ টাকায় কিনে ১১০০ টাকা, যমুনা এলপিজি গ্যাস কোম্পানির কাছে ১০৪০ টাকায় কিনে ১০৮০ এবং ওমেরা এলপিজি গ্যাস কোম্পানির কাছে ৯৫০ টাকায় কিনে করে ৯৮০ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করছি।’
এ বিষয়ে নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। দাম না বাড়লেও বেশি দামে বিক্রি করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Development by: webnewsdesign.com