চরম হয়রানি ও অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কাজে গেলেই হতে হয় ভোগান্তির শিকার। অফিসের কর্মচারীদের রুঢ় ব্যবহারে দূর-দূরান্তের ভোটাররা অতিষ্ঠ বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইউপি নির্বাচনের দোহাই দিয়ে কর্মকর্তারা জরুরি কাজগুলো আটকে দেন বছেরর পর বছর। এমনও আছে যে, ২০১৭ সালে নাম সংশোধনী করতে এখনো নির্বাচন অফিসের কর্তাব্যক্তিদের পেছনে ঘুরছেন অনেকে।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বারইখালী গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আল মামুন নতুন ভোটার হতে গিয়ে ৮ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এই ঘুষ নেন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক রোকনুজ্জামান রকি। ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আ. ছালেকের কাছে ধর্ণা দেন আল মামুন।
এ নিয়ে গোটা অফিসে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে- রোকনুজ্জামান রকি উপজেলা নির্বাচন অফিসার মশিউর রহমানের খুব প্রিয়পাত্র। সদর উপজেলার বারইখালী গ্রামের আল মামুন জানান, তিনি দুই মাস আগে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তার ছবি তোলা হচ্ছিল না। বুধবার অফিস সহায়ক রকির কাছে টাকা দিলে ছবি তোলার এসএমএস যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫ হাজার টাকা দিলে তার ছবি তুলে দিতে রাজি হয় রকি। এদিকে টাকা দেয়ার আগে নোটগুলোর ছবি ও টাকা দেয়ার ভিডিও ধারণ করে আল মামুন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে রকির অবৈধ লেনদেনের বিষয়ে অভিযোগ দিলে পকেট চেক করা হয় রকির। টাকা লেনদেনের ভিডিও গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে পৌঁছলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা মুহূর্তে ছড়িয়ে পরে। এদিকে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া শাপলা চত্বরের মাসুদ অটোর মালিক মাসুদের ছেলে ভোটার স্থান পরিবর্তনের আবেদন করেন ৮ মাস আগে। অবশেষে তিনি নির্বাচন অফিসের রকির সঙ্গে চুক্তি করে সফলতা পান। বিনিময়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মশিউর রহমানকে একটি হেলমেট দেয়া হয়। রকির বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মশিউর রহমান বলেন, ফাঁদে ফেলে একটি চক্র রকিকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। ফ্রি হেলমেট নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি নিজেই হেলমেট নিয়ে এসেছি। কিন্তু এই বাবদ নয়। টাকা দেয়ার কথা আমার মনে ছিল না। জেলা নির্বাচন অফিসার আ. ছালেক জানিয়েছেন, অফিস সহায়ক রোকনুজ্জামান রকির বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে কারও অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জানালে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Development by: webnewsdesign.com