জৈন্তাপুর মহিলা মাদ্রাসা জোরপূর্বক দখল করতে গাফফার-হানিফ বখাটে চক্রের গোপন মিটিং পন্ড

সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০ | ৩:৩৩ অপরাহ্ণ

জৈন্তাপুর মহিলা মাদ্রাসা জোরপূর্বক দখল করতে গাফফার-হানিফ বখাটে চক্রের গোপন মিটিং পন্ড
apps

আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, প্রাতিষ্ঠানিক শৃংখলা ভঙ্গ, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অযোগ্যতা, পরিচালনা কমিটির সাথে অশুভ ও অন্যায় আচরণ,বিশ্বাসভঙ্গ এবং মাদ্রাসার অফিসিয়াল ডকুমেন্ট ও অফিস সামগ্রী আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্তকৃত সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল গাফফার ও বখাটে আব্দু্ল হানিফ চক্র জৈন্তাপুর মহিলা মাদ্রাসা অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে।আখলাকুল আম্বিয়ার প্ররোচনায় ও ইঙ্গিতে এ চক্র মাদ্রাসা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এজন্য গতকাল শনিবার মাদ্রাসার অদুরে একটি মসজিদ সংলগ্ন স্থানে একটি সভা করে এ চক্র।তারা এলাকার কিছু মানুষকে ভূল বুঝিয়ে এ সভায় আনলেও সন্ত্রাসীদের পক্ষে এলাকার বিএনপি নেতা আব্দুশ শুকুর বক্তব্য প্রদান করে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে উস্কানী দিলে সভায় বিশৃংখলা দেখা দেয় ও সভা পন্ড হয়ে যায়।এ সভাটি তারা মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে করার পরিকল্পনা করেছিল,কিন্তু প্রশাসনের কঠোর নিষেধে লুকিয়ে মাদ্রাসার বাহিরে সভা করে এ চক্র।

সু্ত্র উল্লেখ করে,উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একের পর এক মাদ্রাসা বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে গাফফার -হানিফ চক্র।বহিষ্কৃত সুপার আব্দুল গাফফার এবং তার অন্যতম সহযোগী গোলাম কিবরায়া,বখাটে হানিফ এবং আলতাফুর গত মঙ্গলবার রাতের আঁধারে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আনোয়ারের বাড়ীতে গিয়ে হামলা করলে উত্তেজিত ও বিক্ষুব্ধ জনতা তাদেরকে গণধোলাই দেয়।পরে পুলিশের সহযোগিতায় তারা পালিয়ে যায়।জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার নবনিযূক্ত ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আনোয়ার হোসেনের উপর নগ্ন হামলা ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করানোর হীন উদ্দেশ্যে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছে গাফফার -হানিফ চক্র।মঙ্গল বার রাত ৮ ঘটিকার সময় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়,জৈন্তা মহিলা মাদ্রাসার বহিষ্কৃত সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার ভারতীয় চোরাচালানী আব্দুল গাফফার ও গোলাম কিবরিয়া এবং বখাটে সন্ত্রাসী হানিফ মিয়া ও সরকারী কর্গমচারী আলতাফুর গত মঙ্গলবার রাত ৮ ঘটিকায় উপজেলার উত্তর রুপচেং গ্রামের মসজিদ কোয়ার্টারে মাওলানা আনোয়ার হোসেনের আবাসস্থলে যায়। আনোয়ার হোসেন বিগত ১৩ বছর যাবত উক্ত মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রামের মানুষ এশার নামাজ শেষে যার যার বাড়ীতে চলে গেলে এ সুযোগে সন্ত্রাসী কায়দায় গাফফার, হানিফ,আলতাফ ও কিবরিয়া অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আনোয়ার কে জৈন্তা মহিলা মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের পদ থেকে পদত্যাগ করাতে জোরপূর্বক সাদা কাগজে দস্তখত নিয়ে চলে যায়।প্রায় ঘন্টাখানেক পর প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী গাফফার,হানিফ ,আলতাফ ও কিবরিয়া পুনরায় আসলে উত্তেজিত গ্রামবাসী গাফফার,কিবরিয়া,হানিফ ও আলতাফ কে আটক করে গণধোলাই দেয়।

জানা যায়, করোনাকালীন বন্ধের সময় ১৫ নভেম্বর রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশ অমান্য করে গোপনে কিছু বখাটে যুবক নিয়ে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় হানিফ ও গাফফার। তারা মাদ্রাসার তালা ভেঙ্গে বেআইনী ভাবে অফিসকক্ষে প্রবেশ করে এবং কিছু সময় অতিবাহিত করে। এই চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কেও মিসগাইড করে।তারা মাদ্রাসায় অবস্থান করতে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে জৈন্তাপুর পুলিশ কে সহযোগীতা করতে একটি ভূয়া দরখাস্ত থানায় প্রেরণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার সকালে জৈন্তাপুর মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর মোফাখখারুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মাদ্রাসায় অবস্থান নেয় এবং কমিটি কর্তৃক বহিষ্কৃত প্রাক্তন সুপার গাফফার ও বখাটে হানিফ গং কে পাহারা ও নিরাপত্তা দেয়। পুলিশের এমন ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, উপজেলা সদরে অবস্থিত জৈন্তাপুর মহিলা মাদ্রাসা দখলের জন্য হানিফ ও গাফফার চক্র দীর্ঘদিন থেকে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৪ সালে এ চক্র ঐ মাদ্রাসা দখলের চেষ্টা করেছিল। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়। এ বছর করোনা মহামারির সুযোগে অবৈধ চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িত গাফফার ও হানিফ বাহিনী মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। তারা বিভিন্ন ভাবে কমিটির সাথে সংঘর্ষ বাঁধানোর চেষ্টা করছে। জৈন্তাপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানা যায়। তিনি এবং নিজপাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও এলাকার মুরুব্বীদের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রোববার গাফফার -হানিফ চক্র মাদ্রাসার দারোয়ান কে জিম্মি করে জোরপূর্বক প্রবেশ করে।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,জৈন্তাপুর ইসলামিক সোসাইটি পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত জৈন্তা মহিলা মাদ্রাসা দখলে অশুভ শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, একটি প্রতিক্রিয়াশীল ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে মাদ্রাসাটির প্রতি। তারা যে কোনভাবে মাদ্রাসা দখলের জন্য মরিয়া উঠেছে। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে আমরা জৈন্তাপুর ইসলামিক সোসাইটির উদ্যোগে এ মাদ্রাসার জন্ম দিয়েছি।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সোসাইটি কিংবা মাদ্রাসার সাথে আব্দুল গাফফার, হানিফ,কিবরিয়া ও আখলাকুল আম্বিয়ার দুরতম কোন সম্পর্ক ছিল না এবং এ পর্যন্ত নেই। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, করোনা মহামারীর এ দুর্যোগের সময় প্রতিষ্ঠান বন্ধকালীন সম্পূর্ণ আমাদের অগোচরে ও গোপনে আখলাকুল আম্বিয়ার প্ররোচনায় ও ইন্ধনে গত ১৫ নভেম্বর রবিবার সকালে চোরাচালানী গাফফার ও বখাটে হানিফ মাদ্রাসা দখলের হীন উদ্দেশ্য ও কূমতলবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।

দারোয়ান কে জিম্মি করে অনেক দলিল দস্তাবেজ ও সম্পদ দখল করে নেয়।আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।এবং অনতিবিলম্বে মাদ্রাসার সম্পদ ও ডকুমেন্ট ফিরিয়ে না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

Development by: webnewsdesign.com