জিয়া, এরশাদ ও খালেদার জন্ম বাংলাদেশে হয়নি

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৭:২৭ অপরাহ্ণ

জিয়া, এরশাদ ও খালেদার জন্ম বাংলাদেশে হয়নি
apps

জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়ার জন্ম বাংলাদেশে হয়নি। তারা এই মাটির সন্তান নন। এ পর্যন্ত যারা বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেছেন, তাদের মধ্যে কেবল আমি এবং আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই এ মাটির সন্তান। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইউরোপ আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ইতালি সফরের প্রথম দিন তিনি বলেন জিয়াউর রহমানের জন্ম বিহারে, এরশাদের জন্ম কুচবিহারে আর খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুঁড়ি। এদের একজনও এই মাটির সন্তান না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই মাটির সন্তান এবং সে কারণেই তিনি ত্যাগ স্বীকার করেও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু আমাদের মাটির টান আছে, সেজন্য আমাদের একটা কর্তব্যবোধও আছে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতেই হবে। সেই কথা চিন্তা করেই আমরা প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো জাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। আমাদের আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। আমরা সামনে এগিয়ে যাব।’

 

 

 

এদিকে, মুজিববর্ষে একটি লোকও গৃহহীন থাকবে না’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নদী ভাঙনকবলিত জনগণের পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে পৃথকভাবে একশ’ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে, যাতে করে বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য ঘর-বাড়ি ভিটে-মাটি বিক্রি করতে না হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সারাদেশে ৫ হাজার ৮শটি ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছে; যার মাধ্যমে বিদেশে গমনেচ্ছুরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে তাদের নাম নিবন্ধন করতে পারেন। আমরা যাতে প্রত্যেক উপজেলার থেকে কমপক্ষে এক হাজার লোককে বিদেশে পাঠাতে পারি সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা তাদের জন্য স্মার্ট কার্ড দিচ্ছি।’

এর আগে মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট (এমআরপি) দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন ই-পাসপোর্টের যুগ চলছে। আমরা এরই মধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান কর্মসূচি শুরু করেছি। যাতে কেউ জালিয়াতির শিকার না হয়। বিমানবন্দরে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য এই ব্যবস্থা‘- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আরও উন্নত যাত্রীসেবা দেওয়ার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করছি।’

 

 

 

 

এ সরকার আরও ব্যাপকহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের জনগণকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।’

এদিকে, বিগত ১১ বছরে দেশের চমকপ্রদ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর পেছনে কোন যাদু নেই। এজন্য দেশকে ভালভাবে জানা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন। জনগণকে ভালোবাসা, তাদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখা এবং তাদের কল্যাণে কাজ করা প্রয়োজন; যা বাবা-মা আমাদের শিখিয়েছেন।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, এই দেশকে নিয়ে জাতির পিতার একটি বিরাট স্বপ্ন ছিল। বঙ্গবন্ধুর সন্তান হিসেবে তার ইচ্ছেটা আমি জানি। যে কারণে তিনি জীবনের সবকিছুই ত্যাগ করেছিলেন। তাই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি এবং সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের একটি অর্থনৈতিক নীতিমালা এবং লক্ষ্য রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েই আমরা এ সম্পর্কে ভুলে যাই না। আমরা প্রতিবছর বাজেট প্রণয়ন করে ইশতেহার বাস্তবায়নের কাজকেও এগিয়ে নিয়ে যাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখনও অনেক কাজ বাকি। আমরা যে সময় পাব তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে দেশকে দ্রুত উন্নত করার চেষ্টা করব। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। বিমানের ফ্লাইট চালুর বিষয়ে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে ইতালি সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমি ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করব।’

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, আওয়ামী লীগের ইতালি শাখার সভাপতি হাজী মোহাম্মাদ ইদ্রিস ফারাজি ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে হোসনে আরা বেগম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিওসিপ্পে কাঁতে’র আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সরকারি সফরে সেখানে রয়েছেন।

Development by: webnewsdesign.com