জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রমে উদ্বোধন করা হয়েছে। যেসকল শিক্ষার্থী এখনও এনআইডি পাননি, তারা এখান থেকেই নিবন্ধন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা সংগ্রহ করতে পারবেন।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এর মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর, (IDEA-2) এর প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মাহফুজা আক্তার, ঢাকা জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার জনাব মুনির হোসাইন খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান।
এসময় IDEA-2 এর প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের বলেন, এনআইডি কার্ড নাগরিক জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সেজন্য এর তথ্য যাতে ভুল না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনারা যখন নিবন্ধন ফরম পূরণ করবেন তখন বাবা-মায়ের নাম, নিজের নাম, জন্মতারিখ সব সঠিকভাবে পূরণ করবেন। এসএসসি সনদের সাথে মিল রেখে সবকিছু পূরণ করবেন, যাতে সবকিছুরই মিল থাকে। আর স্মার্ট কার্ডের পিছনে এখন বর্তমান ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। এই ঠিকানা অনুযায়ী কিন্তু আপনি সেই এলাকার ভোটার। অন্য জায়গায় গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই এবিষয়টা ভেবে তারপর বর্তমান ঠিকানা দিয়ে ফরম পূরণ করবেন।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এর মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর বলেন, এনআইডি বা স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ২২ টি সেবা গ্রহণ করা যায়। দিনে দিনে এটা আরও বাড়বে। এমন একটা সময় আসবে একজন নাগরিকের যাবতীয় কাজ আপনার স্মার্টকার্ডের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে হবে। সকল ধরণের নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে স্মার্টকার্ডের প্রয়োজন হবে। আপনারা সুশৃঙ্খলভাবে আমাদের সেবা গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশাবাদী। এটা হয়তো প্রতীকী একটা তারিখ হিসেবে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলবে৷ কিন্তু তারপরও যদি বাকি থাকে, আপনারা দলবদ্ধভাবে একটা গাড়িতে করে আমার অফিসে যাবেন। আমরা আপনাদের সেবা প্রদান করবো।
তিনি আরো বলেন, এনআইডি করতে গিয়ে আমাদের নিরাপত্তার দিকেও নজর দিতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য দুষ্কৃতিকারীরা আমাদের এনআইডি নিবন্ধন করে বাইরে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। সেজন্য আমরা নিরাপত্তার দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভেরিফিকেশন করবো। বিভিন্ন কাগজপত্র চাইবো। আশা করি আপনারা সবাই সহযোগিতা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ঢাকার আদি স্থান। এখানে আপনারা আমাদের শিক্ষার্থীদের এনআইডি কার্যক্রমে সেবা দিতে এসেছেন সেজন্য ধন্যবাদ। এই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আমাদের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. নিয়াজ আলমগীরের সহধর্মিণী বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আইডিয়া প্রজেক্টের মানব সম্পদ পরামর্শ আরমিন আক্তার এনআইডি নিবন্ধনের প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করতে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য তাকে ধন্যবাদ। শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খলভাবে এনআইডি নিবন্ধন করার জন্য আহ্বান করছি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমি যখন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি তখন করোনার জরুরী অবস্থা চলছিল, সরকার থেকেও টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা করা হলো। তারপর সব সহকর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে টিকার জন্য কাজ করেছি। টিকা দেওয়ার জন্য এনআইডির প্রয়োজন। আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরই এনআইডি নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করার সাথে সাথেই তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যার ফলে ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীরা এনআইডি কার্ড করার সুযোগ পাচ্ছেন। এই কাজটি সম্পন্ন করতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে এনআইডি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে সেবা নিবেন।
এর আগে ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে টিকাদান কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়। টিকার রেজিষ্ট্রেশনে এনআইডির প্রয়োজন হয় বিধায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচন করে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ২৫ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ৩দিন ব্যাপী সকাল ১০টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান থাকবে।
Development by: webnewsdesign.com