চীনে বেড়েই চলছে বেকারত্ব, দিশেহারা যুবকরা বেছে নিচ্ছে অপরাধের পথ

শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪ | ২:০৭ অপরাহ্ণ

চীনে বেড়েই চলছে বেকারত্ব, দিশেহারা যুবকরা বেছে নিচ্ছে অপরাধের পথ
apps

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়েই চলছে। ‘বেকারত্ব’ শব্দটির অস্তিত্বই যেখানে ছিল না, সেই দেশে বেকারত্বের হার এখন রেকর্ড উচ্চতায়। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির চাকরিক্ষেত্রে ইঁদুর দৌড় শুরু হয়েছে। বেকারত্ব লাখ লাখ কলেজ স্নাতকদের কঠিন সংগ্রামের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক তরুণ চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন পথ বেছে নিচ্ছেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেও কেউ সস্তা বেতনের চাকরি করছেন। কেউ বা আবার চাকরি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাবা-মায়ের পেনশনে চলতে শহর থেকে বাড়িতে ফিরছেন। কেউ কেউ আবার দিশেহারা হয়ে অপরাধের পথ বেছে নিচ্ছেন।

চীনের ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সি আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন যুবকের বেকারত্বের হার গত বছরের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩ সালের জুনে যখন এটি সর্বোচ্চ (২১.৩ শতাংশ) পর্যায়ে পৌঁছায় তখন দেশটির কর্মকর্তারা তথ্য প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধ করে দেন। এক বছর পর ২০২৪ সালেও এই হারের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এ বছর সরকারের বেশ কিছু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বেকারত্বের হার জুলাইয়ে ১৭.১ শতাংশে পৌঁছেছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, তরুণদের জন্য চাকরি খোঁজা একটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। কলেজ স্নাতকদের জন্য ভালো চাকরির সম্ভাবনা, ঊর্ধ্বমুখী সামাজিক গতিশীলতা এবং জীবনের প্রতি আরও আনন্দদায়ক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন শি।

তবে সরকার তরুণদের নিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য চাকরি মেলাসহ সহায়ক ব্যবসায়িক নীতি বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু কোনো কিছুই যেন কমাতে পারছেন না বেকারত্বের হার। কিছু বেকার যুবক শহরে পড়াশোনা শেষে বাড়ি ফিরে তাদের বাবা-মায়ের অবসরকালীন পেনশনের ওপর নির্ভর করছে। এমনকি স্নাতক ডিগ্রিধারী হয়েও রেহাই নেই তাদের। কম বেতনের চাকরি নিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। চাকরি না পেয়ে কেউ কেউ আবার ঝুঁকছেন অপরাধের দিকে।

চীনের হুবেই ইউনিভার্সিটি অব চাইনিজ মেডিসিন থেকে সম্প্রতি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন আমাদা চেন। ১৩০টিরও বেশি চাকরির আবেদনের পর একটি চাকরি পান তিনি। জানালেন টানা ১২ ঘণ্টা কাজ করা সত্ত্বেও তিনি দিনে মাত্র ৬০ ইউয়ান (৮.৪০ ডলার) পান।

চেন একটি মানসম্পন্ন পরিদর্শক বা গবেষক হতে চেয়েছিলেন। কাজের অভিজ্ঞতার জন্য এই চাকরিতে যোগ দেন তিনি। চেনের ভাগ্যে এই চাকরি মিললেও অনেকের ভাগ্যে সেটিও জুটছে না।

Development by: webnewsdesign.com