চলিত বছরে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলার সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে

মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ | ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

চলিত বছরে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলার সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে
প্রতীকী ছবি
apps

২০২০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সারা দেশের সব থানায় মোট ১৮ হাজার ২২১টি মামলা দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ) এক গবেষণার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সমিতির প্রেসিডেন্ট সালমা আলী গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণায় প্রাপ্ত নানা তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে তুলে ধরেন। ‘২০২০ সালের প্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন: বিশ্লেষণ এবং করণীয় কী’ এই শিরোনামে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তিনি।

সালমা আলী জানান, সময়ের সাথে সহিংসতার প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা এখন নতুন ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ নির্যাতন হয়েছে চলমান কোভিড-১৯ মহামারীকালে সংগঠিত সহিংসতার মাধ্যমে।  নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে ১১ দফা সুপারিশ সম্বলিত এক তালিকা দেন মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি। এরমধ্যে ধর্ষণের শিকার নারী/শিশুকে এমনভাবে আইনি সহায়তা দেওয়ার পরামর্শ দেন, যাতে সকল দিক থেকে তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।

এছাড়া, তিনি মামলার দ্রুত ও ন্যায়বিচার এবং সাক্ষীদের সুরক্ষিত রাখার বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। মামলার তদন্তে সর্বাধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রশিক্ষিত কর্মকর্তার হাতে মামলার অনুসন্ধানের দায় অর্পন এবং তদন্তকে সকল প্রকার রাজনৈতিক স্বার্থ ও প্রভাবের বাইরে রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

নির্যাতন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে হাইকোর্টে একটি বিশেষ আদালত প্রতিষ্ঠা এবং মানবপাচারে অভিযুক্তদের বিচারে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি করে নির্ধারিত সময়ে মামলার বিচারকাজ শেষ করার কথাও বলেন তিনি। এছাড়া, শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিদ্বন্দ্বী নারী ও শিশুর সুরক্ষায় ভিক্টিমের তথ্য নিরাপত্তা রক্ষা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং সামাজিকভাবে উপেক্ষিত শ্রেণি (হিজড়া ও শারীরিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের) জন্য সহজে আইনি সেবা নেওয়ার সুযোগ নিশ্চিতকরণ এবং মানবপাচারে সাহায্যকারীদের শনাক্ত করার সুপারিশ করা হয়।

সালমা আলী নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা পরিচালনার জন্য কর্মকর্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্ব দেন। এর ফলে তারা সহিংসতার শিকার নারী/শিশু এবং তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে পারবে, বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সম্মেলনে সকল বক্তা সব কর্মস্থলে বিশেষ কমিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের দাবি করেন। এছাড়া, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে সব রকমের ধর্ষণকে অন্তর্ভুক্তিকরণ, ১৫৫ (৪) ধারার সাক্ষী সুরক্ষার আইন সংস্কার এবং ধর্ষিতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিচারকাজে ব্যবহৃত অন্যান্য আইনি ধারা পরিবর্তনের দাবিও তোলেন।

Development by: webnewsdesign.com