চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে হয়রাণি করছেন কতিপয় মহল

বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ২:০০ অপরাহ্ণ

চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে হয়রাণি করছেন কতিপয় মহল
apps

গণমানুষের বিপুল সমর্থনে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জেসমিন হক জেসি চৌধুরী। নির্বাচিত হবার পর উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জেসি চৌধুরী অল্পসময়ে চকরিয়া উপজেলার তৃনমুল জনপদে নারী জাগরণ সৃষ্ঠি করেছেন তিনি। আর এই জনপ্রিয়তায় ইর্ষাণিত হয়ে কতিপয় মহল এখন তাকে ঘায়েল করতে নানাধরণের চক্রান্তে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী।

গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি দুপুরে চকরিয়া থানা সেন্টারস্থ নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী দাবি করেন, তিনি দশবছর আগে উচিত মুল্যে টাকা পরিশোধ করে জায়গা ক্রয় করলেও কতিপয় ওই মহলটি পুরানো ঘটনাকে নতুন করে সাজিয়ে জায়গার বিক্রেতা হোসেন জমিদারকে ব্যবহার করে সংবাদ সম্মেলনের নামে খবর ছাপিয়ে প্রশাসনসহ জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্ঠা করছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনের আলোকে রবিবার দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় “চকরিয়ায় নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এছাড়াও অভিযোগ গুলোকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী এলাকার মোঃ কালুর পুত্র আলী হোছন কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগে যে সংবাদ সম্মেলন সম্মেলনটি করেছে মুলত সেটি স্থানীয় কিছু স্বার্থন্বেষী মহল আলী হোছনকে ব্যবহার করে সাজিয়েছেন। উক্ত আলী হোছন ২০১১ ও ২০১৫ সালে আমার বরাবরে আমমোক্তারনামা সম্পাদনের বিষয়টিও স্বীকার করিয়াছেন। উল্লেখিত আমমোক্তারনামা দলিল তিনি আমার বরাবরে স্বেচ্ছায় সম্পাদন করেছেন।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী বলেন, ২০১১ সালে উল্লেখিত আমমোক্তারনামা সম্পাদন করিয়া তাঁর অনুবলে আমার সম্পাদিত দলিলে আলী হোছন নিজে স্বাক্ষী হিসাবে দস্তখত করিয়াছেন। হস্তান্তরকৃত ও বায়নাকৃত জমির মূল্য রশিদপত্র মূলে ও চেক মূলে আলী হোছন নিজেই গ্রহণ করিয়াছেন। উক্ত আমমোক্তারনামা মূলে সম্পাদিত জমির টাকা তিনি উক্ত মতে গ্রহণ করেও পরবর্তীতে তাহার ছেলে আবুল বশরের প্ররোচনায় আমার বিরুদ্ধে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে (অপর ২২/২০১২)মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী জেসি চৌধুরী বলেন, জমি বিক্রেতা আলী হোছনকে আমি নিজের পিতার ন্যায় ভক্তি শ্রদ্ধা করি। আলী হোছন আমার বিরুদ্ধে মামলা করার পরও তাহার প্রতি আমার ভক্তি শ্রদ্ধা এতটুকু কমে নাই। বরং তিনি সেসময় আমার নিকট হইতে আরো বেশী আর্থিক সাহায্য নিয়াছেন। যাহার দালিলিক প্রমাণ আমার হাতে আছে। আমার আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা ও বিশ্বস্ততায় খুশি হয়ে আলী হোছন কর্তৃক ২০১১ সালের ১৬ মে তারিখে আমার বরাবরে সম্পাদিত ৩১৯৭ নং আমমোক্তারনামা দলিল চ্যালেঞ্জ করিয়া আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরও ২০১৫ সালের ২৭ মে তারিখ ২৭৮৮ নং অপ্রত্যাহার যোগ্য আমমোক্তারনামা দলিল সম্পাদন করেন।

দুইটি আমমোক্তারনামা দলিলই আলী হোছন স্বেচ্ছায় আমার বরাবরে সম্পাদন ও মঞ্জুরী দিয়াছেন। আমি কোন অন্যায় কাজ করিলে তিনি একটি আমমোক্তার নামা দলিল সম্পাদনের পর উক্ত আমমোক্তার নামা দলিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিয়া আরো একটি রেজিষ্টার্ড আমমোক্তার নামা দলিল সম্পাদন করিতেন না। আমি যাহা করিয়াছি তাহা আমমোক্তার নামা দলিলে প্রদত্ত ক্ষমতার মধ্যে থাকিয়াই করিয়াছি। যাহার সুফল আলী হোছন ভোগ করিয়াছেন এবং অদ্যাবধি করিতেছেন। আমি কোন জাল দলিল সৃজন করি নাই। আমি যাহা করিয়াছি সব বিষয় আলী হোছনকে অবগত করাইয়া আলী হোছনের মঙ্গলার্থে করিয়াছি।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী বলেন, বিপুল জনসমর্থনে ২০১৯ সালের নির্বাচনে আমি চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছি। আমি কোন জাল দলিল সৃজন করিনি। কাহারো জমি দখল করিনি। মুলত জনপ্রিয়তায় ইর্ষাণিত হয়ে কতিপয় মহল এখন আমাকে ঘায়েল করতে নানাধরণের চক্রান্তে মেতে উঠেছে। পুরানো ঘটনাকে নতুন করে সাজিয়ে জমি বিক্রেতা আলী হোছনকে ব্যবহার করে স্থানীয় স্বার্থন্বেষী মহলের অন্যতম হোতা মানব পাচারকারী হাজী নুর হোছন আমার সম্মাণহানির জন্য সংবাদের আলোকে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাঁর প্রমাণ হিসেবে দেখা গেছে, সম্মেলনের মূল আয়োজক হাজী নুর হোছন জমি বিক্রেতা আলী হোছনের পক্ষে টুপি পরিহিত অবস্থায় সেখানে বসা আছেন।

চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী দাবি করেন, সংবাদ সম্মেলনকারী জমি বিক্রেতা আলী হোছন ভালো মানুষ। কিন্তু তাঁর ছেলে বশির আহমদ একজন তালিকাভুক্ত অপরাধী। তাঁর নামে চকরিয়া থানা ও আদালতে অন্তত ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। যার নং হচ্ছে জি,আর ১০০/১৩, চকরিয়া থানার মামলা নং- ০১, তাং-০১/০৩/১৩ইং, জি,আর ৯৭/১৩, চকরিয়া থানার মামলা নং- ৪২, তাং-২৮/০২/১৩ইং, জি,আর ১৫২/১৩, চকরিয়া থানার মামলা নং- ১০, তাং-০৯/০৪/১৩ইং, জি,আর ১৬১/১৩, চকরিয়া থানার মামলা নং- ১৯, তাং-১৫/০৪/১৩ইং, জি,আর ৫৪৯/১১, চকরিয়া থানার মামলা নং- ৪২, তাং-৩১/১২/১১ইং, জি,আর ৩৫৭/১২, চকরিয়া থানার মামলা নং- ৪০, তাং-১৯/০৭/১২ইং, নন জি,আর ০৪/১৩, (বর্তমান চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন আছে। নন জি,আর ০৫/১৩, (বর্তমান চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন আছে। সি,আর ১২৩/১২, (বর্তমান চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচরাধীন আছে।) এম,আর ৩০৩/১২, উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন আছে।

Development by: webnewsdesign.com