গৃহকর্মীকে গরম ইস্ত্রি ও চামচের ছ্যাঁকা দিত দম্পতি…

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

গৃহকর্মীকে গরম ইস্ত্রি ও চামচের ছ্যাঁকা দিত দম্পতি…
apps

ঢাকায় অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার বাসায় নির্মম নির্যাতনের স্বীকার ১১ বছরের শিশু নিশি আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুবা আক্তার শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে ওঠে আসে রোমহর্ষক নির্যাতনের চিত্র। নির্যাতনে শিশুটির শরীরজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে দগদগে ক্ষতের। নির্যাতনের আতঙ্ক এখনো শিশুটির চোখেমুখে।

জবানবন্দিতে শিশুটি জানায়, ওই পরিবারের সবাই তার ওপর নির্যাতন করত। হাত পেছনে বেঁধে রেখে শরীরে গরম পানি ঢেলে দিয়েছিল গৃহকর্ত্রী মুন্নী। এ ছাড়া গরম ইস্ত্রি দিয়ে শরীরে ছ্যাঁকা দিত। চামচ গরম করে পুড়িয়ে দেয় শরীরের বিভিন্ন স্থান। এ ছাড়া খেতেও দিত না ঠিকমতো।

বেশি খাবার খাওয়া, ঘুম থেকে দেরি করে ওঠা, কাজ ঠিকমতো না করার অজুহাত দিয়ে তাকে নিয়মিত নির্যাতন করা হতো বলেও জানায় শিশুটি।

শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর ঢাকা থেকে নিয়ে এসে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের বাসস্ট্যান্ডে রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী শারমিন রহমান মুন্নীকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতনকারী দম্পতির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজাবাড়িয়া গ্রামের হতদরিদ্র মজিবুর রহমানের মেয়ে নিশি আক্তার। চার বছর আগে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেওয়া হয় নিশিকে। কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা অজুহাতে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাত গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী ও তাদের ছেলে। মেয়েটিকে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হতো না।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের পাটগুদাম বাসস্ট্যান্ডে নিশিকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী মুন্নী। এ সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে ওই দম্পতিকে আটক করে পুলিশে দেয় নিশির পরিবার। নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা

নির্যাতনের ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক ঢাকার দৈনিক বাংলা শাখার এজিএম মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী শারমিন রহমান মুন্নী এবং দালাল হেলাল উদ্দিনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার জানান, গ্রেফতারকৃত দম্পতির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com