ক্রিমে রঙ ফর্সা হচ্ছে

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২ | ১:৪৭ অপরাহ্ণ

ক্রিমে রঙ ফর্সা হচ্ছে
apps

এই উপমহাদেশে ‘ফর্সা মেয়ে’ শব্দটির ব্যবহার দেখা যায় প্রবলভাবেই। সুন্দরের প্রতিশব্দই যেন ‘ফর্সা ত্বক’। কালো ত্বকের সৌন্দর্য কিংবা মানসিক সৌন্দর্যের আলাপ নানাভাবে তোলা হলেও সেসব প্রতিষ্ঠা করা যায়নি বলে মনে করছেন সচেতন মহল। রঙ ফর্সা করার ক্রিমের পেছনে এখনও ছুটছেন অনেকে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে দেখানো ‘ম্যাজিক ক্রিম’-এর দৌরাত্ম্য।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এসব ক্রিম ব্যবহারকারীরা ত্বক পুড়ে যাওয়া, ত্বক পাতলা হওয়া ও সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ার মতো মারাত্মক রোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
অবশ্য যারা ফেসবুকে রাতারাতি ত্বক সাদা করার ক্রিম বিক্রি করছেন তারা কেউ কেউ বলছেন, এমন অভিযোগ কেউ করেনি। কোরিয়া ও চীন থেকে যেসব পণ্য এনে তারা বিক্রি করেন সেগুলোর কোনও ‘সাইড এফেক্ট’ নেই বলেও দাবি তাদের।

ঠিক কত শতাংশ মানুষ এসব ক্রিম ব্যবহার করছেন তার সঠিক হিসাব নেই। তবে ত্বকের চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের কাছে প্রায়ই এমন রোগী আসছেন যারা ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওই রোগীদের অধিকাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।

বিশেষজ্ঞরা জানালেন, এ ধরনের অনেক ক্রিমেই থাকে ক্ষতিকর স্টেরয়েড। যা ত্বকের বেশ ক্ষতি করে। ত্বকে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতাও দেখা দেয় এতে।

এমনকি এ ধরনের ক্রিমের প্রয়োগে হরমোনের গোলমাল হয়ে অনেক তরুণীর মুখে অবাঞ্ছিত লোম গজানোর ঘটনাও ঘটছে।
তথাপি অনলাইনে এসব ক্রিমের কেনাবেচা চলছে হরদম। ক্রিম বিক্রেতা মুন অনলাইন শপের সত্ত্বাধিকারী মুন বলেন, ‘ত্বকের নানা ধরন রয়েছে। না বুঝে যেকোনও ক্রিম লাগিয়ে বিপদে পড়তে পারেন অনেকে। আমার শপে কোরিয়া চীনের যেসব পণ্য বিক্রি হয় সেসব পরীক্ষিত।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম ও যৌনব্যাধি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, তারা রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে বিপদে পড়েছেন এমন রোগী পাচ্ছেন অনেক। রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তিনি আরও জানান, সাধারণত ২০-৩৫ বছর বয়সী রোগীরা বেশি আসছেন। অধিকাংশই নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির।

এসব ক্রিম ব্যবহারে কী ধরনের ক্ষতি হয় জানতে চাইলে ডা. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, এসব ক্রিমে স্টেরয়েড ও হাইড্রোকুইনোন থাকে। স্টেরয়েড ত্বক পাতলা করে দেয়। এছাড়া ত্বক লাল হয়ে যায়, জ্বালাপোড়া করে। মুখে অবাঞ্ছিত লোমও গজায়।

তিনি আরও বলেন, হাইড্রোকুইনোনের কারণে প্রথম দিকে ত্বকে কিছু পরিবর্তন দেখা গেলেও পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। কোনও ক্ষেত্রে সমস্যার মাত্রা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। এসব ক্রিমের অপব্যবহার রোধে প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজন আছে বলে জানান ডা. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া।

Development by: webnewsdesign.com