কোরবানি ঈদকে ঘিরে হিলিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারীদের

রবিবার, ০৩ জুলাই ২০২২ | ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

কোরবানি ঈদকে ঘিরে হিলিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারীদের
apps

আর মাত্র (সাত) ৭দিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই টুং টাং টুং টাং শব্দে মুখরিত কামার পাড়া। দিনাজপুরের হিলির কামার পাড়ায় বেড়েছে কর্ম ব্যস্ততা এবং তাদের দোম ফেলার সময় নেই। নতুন নতুন দা-ছুরি-বটির পাশপাশি কুরবানির পশু কাটাকাটিতে ব্যবহৃত পুরাতন ছুরি-বটি মেরামতের কাজও চলছে দিন-রাত। তবে হিলির কামার পাড়ায় খুশির চেয়ে উদ্বেগই যেনো জায়গা দখল করেছে। কয়লা সঙ্কেট আর লোহা-ইস্পাতের দাম বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ছাপ পড়েছে এ পেশায় জড়িতদের।হিলি বাজারের(কর্মকার) কামার তারাপদ বলেন, কয়লার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এরই সঙ্গে বেড়েছে দা-বটি বানানোর লোহা আর ইস্পাতের দাম। ফলে এখন কাজ করে আগের মতো লাভ হচ্ছে না। আগে হোটেল, বাসা-বাড়ি থেকে কয়লা সংগ্রহ করা হতো। এখন হোটেল বা বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার হয়। কয়লা পাওয়া তাই দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।’

তিনি আরো বলেন, ইটের ভাটাগুলোতেও গ্যাস এবং কয়লা ব্যবহার হচ্ছে। আগে কাঠ বা খড়ি দিয়ে ভাটায় ইট পোড়ানো হতো। এজন্য কয়লা সঙ্কট দেখা দিয়েছে।হিলি চারমাথা মোড়ের কর্মকার (কামার) প্রদীপ বলেন, বেশি দামে কয়লা কিনতে হচ্ছে। গত বছর এক টিন কয়লা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এবার তা কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে।হিলি বাজারের গোডাউন মোড়ের কর্মকার (কামার) শ্রী কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানির ঈদে মানুষ তেমন অর্ডার দিচ্ছে না। কাঁচা লোহা দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। তাই কোরবানির সরঞ্জাম স্বাভাবিকভাবেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ছুরি-বটি চাকু ব্যবসায়ী শ্রী দিপু মহন্ত বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানি পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। মাংস কাটা দা আমরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা তরে বিক্রি করছি। আগে এর দাম ছিলো ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। বড় চাকু ছিলো ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা এখন তার দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বটি ছিলো ২০০ টাকা, এখন সেই বটি বিক্রি হিচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এছাড়া হাসুয়া ছিলো ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছি।আনিছুর রহমসন নামে এক ক্রেতা বলেন, এ বছর দা, বটি, চাকুর দাম অনেক বেশি। কোরবানির পশু কিনেছি। তাই দাম বেশি হলেও সরঞ্জাম কিনতে হবে। হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দাম আবার কমে আসবে।

হিলি ডাঙ্গাপাড়ার তারিকুল ইসলাম বলেন, লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা সবকিছুর দাম বেশি চাচ্ছে। তাই গত বছরের বানানো দা, বটি আর চাকু কামারের কাছে ধার করতে নিয়ে এসেছি।হিলির কোকতাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, বাজারে প্রায় সব জিনিসের দাম বেশি। কোরবান দেওয়ার গরু ও খাসি কিনেছি। এবারে চাকু, দা, বটির দাম বেশি তারপরও নতুন চাকু ও বটি কিনলাম আর পুরাতন দা, পিটিয়ে ধার করে নিলাম। কি আর করা!

Development by: webnewsdesign.com