শীঘ্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে কোটি কোটি মশার গুঞ্জন, যাদের রীতিমত যত্ন সহকারে তৈরী করা হয়েছে গবেষণাগারে। এককথায় বলতে গেলে এই মশাগুলি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বা জিনের রূপান্তর ঘটানো হয়েছে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক একটি কোম্পানি উষ্ণ জলবায়ুতে আক্রমণাত্মক মশার প্রজাতির সংখ্যা কমানোর প্রয়াসে জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত পুরুষ মশার একটি বিশাল প্রজাতি পরিবেশে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
জানা গিয়েছে, ওক্সিটেক নামের এক সংস্থা বিশেষ উপায়ে গবেষণাগারে যে মশার জন্ম দিয়েছে, তাদের শরীরে রয়েছে বিশেষ প্রোটিন, যার ফলে তারা কামড়াতে অক্ষম। আমরা জানি এডিস মশা কতখানি ভয়ংকর। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই মশাই জিকা, চিকুনগুনিয়া, হলুদ জ্বর ইত্যাদি মারণ রোগের কারণ। যে রোগগুলিতে গোটা পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে এর সুরাহা করা যায় তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চলছে।
সেই সমস্যার সমাধানেই এবার অভিনব উপায় বের করল মার্কিন গবেষণা সংস্থাটি। পরিকল্পনাটি হল , জেনেটিকালি-পরিবর্তিত মশাগুলিকে বনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া,এরা এডিসের স্ত্রী প্রজাতির সাথে বংশবৃদ্ধি করবে। বংশবৃদ্ধির জেরে যে মশা তৈরী হবে তাদের দংশন ক্ষমতা থাকবে না। ফলেএরা রোগও ছড়াতে পারবে না।
বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে এটি আক্রমণাত্মক মশার সামগ্রিক জনসংখ্যাকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে। প্রকল্পটি এই মাসের শুরুতে ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) দ্বারা অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোম্পানিটিকে এখনও তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে কয়েকটি বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে।
এমনকি কিছু বিজ্ঞানী এই পরিকল্পনা সম্পর্কে অসন্তোষ দেখিয়েছেন। একজন বায়োথিসিস্ট এলএ টাইমসকে বলেছেন- ‘কেন এই পরীক্ষাগুলি করা হচ্ছে সে সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতা থাকা দরকার। আমরা কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়ব কিনা সেটাও জানতে হবে।’ ক্যালিফোর্নিয়ার একজন বাসিন্দা বলেছেন, ”এটি উদ্বেগজনক বিষয়। কারণ প্রকল্প রূপায়ণের আগে বাসিন্দাদের সাথে পরামর্শ করা হয়নি এবং তারা এর অংশ হতে সম্মতি দেয়নি।” প্রকল্পটি এখন ক্যালিফোর্নিয়ার কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। Oxitec-এর সিইও, গ্রে ফ্রান্ডসেন, একটি বিবৃতিতে বলেছেন: “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে, এই মশা যাতে মানুষের উদ্বেগ কমাতে পারে আমরা সেই চেষ্টা করছি ।”
সূত্র : www.timesnownews.com
Development by: webnewsdesign.com