বায়তুল মোকাররমে গায়েবানা জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জড়িত এবং বিএনপি তাতে শুধুমাত্র নৈতিক সমর্থন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে গায়েবানা জানাজার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। আপনারা দেখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় সরকারি সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি-সন্ত্রাস-নির্যাতন করে এই যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন (কোটা সংস্কার আন্দোলন) বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সাতজন শিক্ষার্থীকে নিহত করা হয়েছে। আপনারা দেখেছেন যে, একজন শিক্ষার্থী সাঈদকে রংপুরে কীভাবে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ রকম ভয়াবহ ঘটনা আমাদের জীবনে কখনো দেখিনি। আজকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই ধরনের দমননীতি, এই ধরনের নির্যাতন, এই ধরনের হত্যা-গুম করে সরকার আজকে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি এটা তারা (সরকার) আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই শেষ করতে পারত। শুধু তাদের জেদের কারণে আজকে তারা এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও ক্ষোভ আমরা জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকেও আমরা গায়েবানা জানাজা পড়তে এসেছিলাম। আপনারা দেখেছেন এই মসজিদেও কীভাবে তারা প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে আমাদেরকে গায়েবানা জানাজায় বাধা প্রদান করেছে। আমরা এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পুলিশি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, ‘সম্পূর্ণ আগের মতো নাটক সাজিয়ে বিএনপি অফিসে কতগুলো ককটেল বোমা, লাঠিসোঠা রেখে দিয়ে সেখানে তারা আজকে ছবি তুলে আবার বিএনপিকে দোষারোপ করার চেষ্টা চলছে। আমরা খুব স্পষ্ট কণ্ঠে বলতে চাই, এই আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জড়িত। আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে কখনোই সরাসরি জড়িত নই। আমরা তাদেরকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছি, সেই নৈতিক সমর্থন আমরা দিয়ে যাব। কারণ এটা আমরা মনে করি যে তাদের এই আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত।’
বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী এভাবে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সেই আন্দোলন তারা দমন করতে পারেনি। একইভাবে আজকে তারা (সরকার) যেভাবে চেষ্টা করছে তার সঙ্গে কোনোমতেই একমত নই। একমত শুধু নই, আমি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি, ঘৃণা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব হল ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এটা সরকার ইচ্ছা থাকলে করতে পারত, কিন্তু তাদের সেই ইচ্ছাটাই নাই।’
Development by: webnewsdesign.com