কুলাউড়ায় কৃষক সমাবেশ, অনুৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দের অভিযোগ

বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২ | ৪:১৭ অপরাহ্ণ

কুলাউড়ায় কৃষক সমাবেশ, অনুৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দের অভিযোগ
apps

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় অনাবাদি পতিত ফসলি জমিকে ফসল আবাদের আওতায় নিয়ে আসতে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার রাঁউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামে সৈয়দ বাড়ি প্রাঙ্গণে এ কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভূকশীমইল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম উৎপাদনশীল খাত রেখে অনুৎপাদন খাতেই বরাদ্দ দিয়ে সরকারি অর্থের অপচয় হয় অভিযোগ তোলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, বোরো আবাদের বিশাল ফসলী জমি হাকালুকি হাওরের অধ্যুষিত ভূকশীমইল, ভাটের, বরমচাল ও জুড়ীর জায়ফরনগরের মধ্যে রয়েছে। এসব জমিতে বোরো চাষে মারাত্মক সেচ সংকটসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের।
হাওর অধ্যুষিত ওইসব এলাকায় হাজার হাজার একর অনাবদি কৃষি জমি রয়েছে। বোরো আবাদের সময় ক্রস বাঁধ দিয়ে সেচ পাম্প বসিয়ে কৃষি জমির সেচ সংকটের সমস্যা নিরুপন করা হতো। অথচ টিআর ও কাবিখায় বরাদ্দর মাধ্যমে নদী-খালের বাঁধ দেওয়া হতো। কিন্তু এখন কৃষি খাতকে পিছনে রেখে এসব বরাদ্দের অধিকাংশই অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করা হয়।

যারা এসব করছে তারা সরকারের লক্ষ্য কৃষিখাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।  এ সময় তিনি কুলাউড়ার ফানাই নদী খনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল থেকে ভূকশীমইল পর্যন্ত ফানাই নদীর খনন কাজ করে। বাকি ১৫ কিলোমিটার হাকালুকি হাওরের মধ্যে খনন না করেই ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। হাওর এলাকায় নদী-খালগুলো পুনঃখনন না করলে সেচ সংকটে কৃষি আবাদ ব্যহত হবে। আমি জেলা প্রশাসককে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করছি।

সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা জানান, উপজেলার প্রায় ১৫ শ হেক্টর কৃষিজমি অনাবাদি ও পতিত অবস্থায় পড়ে আছে। সেচ সংকটের জন্য ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার অভাবে কৃষকরা নিরোৎসাহিত হচ্ছেন কৃষি ফসল উৎপাদনে। শুকনো মৌসুমে নদী খাল ও বিলে পানি সংকট থাকে। তখন বিকল্প সেচের ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান তার বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে কৃষি ও ফসল উৎপাদন খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের জেলা প্রশাসন ও কৃষিসম্প্রসারণ সবাই মিলে কৃষি খাতে সেচ সংকট, জলাবদ্ধতা ও প্রবাসীদের পতিত জমিসহ বেশ কয়েকটি সমস্যা চিহ্নিত করেছি। ইতিমধ্যে এসব সমস্যা নিরুপণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

প্রনোদনার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদেরকে সহায়তায় প্রনোদনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কৃষিতে শতভাগ সাফল্যে আমরা নগদ অর্থসহ সকল সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। জেলার ৮৭০০ জনকে সবজির বীজ বিতরণ করা হবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে গেলে কুলাউড়াসহ পুরো জেলায় কৃষি ফসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো এবং এক টুকরোও পতিত জমি থাকবেনা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এদিন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শামছু্দ্দিন আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু প্রমুখ।

Development by: webnewsdesign.com