কর্মচারীদের ৪০ মাসের বেতন বকেয়া রেখে নির্বাচনে কোটচাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২১ | ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

কর্মচারীদের ৪০ মাসের বেতন বকেয়া রেখে নির্বাচনে কোটচাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র
apps

চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে ২৫ থেকে ৪০ মাসের বেতন। এমন অবস্থায় কিছু ফান্ড থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোটি কোটি টাকা বেতন ভাতা বাকি রেখে নির্বাচন করছেন বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম জিরে। ফলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে পৌরসভার ৬৫ জন স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী।

১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এক সময়ের ছোট কলকাতা খ্যাত এ পৌরসভায় স্থায়ী ৩৩ জন ও অস্থায়ী ৩২ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন। এদের প্রতিমাসে বেতন ভাতা বাবদ ব্যয় হয় ১৩ লক্ষাধীক টাকার মতো। কিন্তু প্রতিমাসে এর থেকে বেশি বা সমপরিমাণ আয় করে প্রাচীন এ পৌরসভাটি।

আগামী ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে পৌরসভাটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে জিরে।

পৌরসভাটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৯৩। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৪৮৫ জন এবং মহিলা ভোটার ১৪ হাজার আটজন। নয়টি ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৪টি।

সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরসভায় সেবার মান নেই। রাস্তার দুরাবস্থা চরমে। বেশির ভাগ পাড়ায় পানি সরবরাহ নেই। রাতে অধিকাংশ সড়কে বাতি জ্বলে না। নেই উন্নতমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তারপরও নাগরিকরা নিয়মিতই ট্যাক্স দিচ্ছেন, যা থেকে পৌরসভাটির মাসিক আয় হচ্ছে অন্তত ১৫ লাখ টাকার মতো। সাথে সরকারি বিভিন্ন অনুদান তো রয়েছেই। ফলে চরম অস্থির অবস্থায় বিরাজ করছে। বেতন না পেয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছেন কর্মচারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটচাদপুর পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের মাসিক আয় ১৫ লক্ষাধীন টাকা, সাথে সরকারি অনুদান আসে বিভিন্ন সময়। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ লাগে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। এমন অবস্থায় আমাদের বেতন বকেয়া থাকার কথা নয়। কিন্তু মেয়র সাহেব এমন কেন করছেন জানি না। ইতোপূর্বের কোনো মেয়রের সময় এত খারাপ পরিবেশ হয়নি।

পৌরসভার প্যানেল মেয়র আনোয়ারুল ইসলাম সেন্টু জানান, বেতন বকেয়া অনেক আছে। আসলে মেয়র আর সচিবের কাছে আমরা অসহায়। ওয়ার্ডের কাজের জন্য টাকা চাইতে গেলেও দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। মাঝে মাঝে মাসও কেটে যায়। যা করেন মেয়র জাহিদ সাহেব ও সচিব মিলেই করেন। কেন তারা বেতন-ভাতা বকেয়া রেখেছেন তা বলার সাধ্য আমার নেই।

মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে জানান, এরকম বেতন ভাতা বাকি দেশের প্রায় সব পৌরসভায় রয়েছে। দু’দিন পরেই ভোট এখন এমন তথ্য প্রকাশ না করাই ভালো।

এদিকে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সালাউদ্দিন বুলবুল সিডল জানান, আমি যখন ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে কোটচাদপুর পৌরসভার দায়িত্ব হস্তান্তর করি তখন ফান্ড ছিল সব মিলিয়ে ১ কোটি টাকার মতো। সে অবস্থা থেকে কেন এমনটি হলো তা আমি বলতে পারব না।

Development by: webnewsdesign.com