এ বছর বদলে যাবে যাদের ফোন!

রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২০ | ৪:২২ অপরাহ্ণ

এ বছর বদলে যাবে যাদের ফোন!
apps

শুরু হয়ে গেল নতুন একটি দশকও। বিগত দশকে দেখেছি স্মার্টফোনের উত্থান, বাটন ফোন থেকে বাটন ও বেজেলের হারিয়ে যাওয়া এবং ফোনের ডিসপ্লে ৩ ইঞ্চি থেকে বেড়ে ৬ ইঞ্চি হওয়া। নতুন দশকের প্রথম বছরে কেমন ফোন পেতে যাচ্ছি—সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আরো বেশি ব্যাটারি লাইফ

ডিসপ্লের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফোনের ব্যাটারির আকারও দিন দিন বেড়েই চলেছে। অথচ সে পরিমাণে ব্যাটারি লাইফ কিন্তু ততটা বাড়েনি। ফোনগুলো টানা ব্যবহারে আট ঘণ্টার বেশি ব্যাটারি লাইফও কোনোভাবেই পাচ্ছে না। চার্জিং প্রযুক্তি উন্নত করে ব্যাটারি লাইফের ঘাটতি পোষানোর চেষ্টা করছেন নির্মাতারা, কিন্তু সেটা মূল সমস্যার সরাসরি কোনো সমাধান নয়। নতুন বছরে সেটা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। ফোনের ব্যাটারি লাইফের সমস্যা কমানোতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে ৭ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি প্রসেসর। আপাতত শুধু ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসরগুলোই এ প্রযুক্তিতে উৎপাদন করা হচ্ছে, তবে এ বছর থেকে মাঝারি দামের ফোনেও দেখা মিলবে এটির। ব্যাটারির ওপর চাপ অনেক কমিয়ে দেবে এ প্রযুক্তি, টানা ব্যবহারে চার্জ ব্যবহার হবে কম। সঙ্গে বোনাস হিসেবে ফোন গরম হওয়ার প্রবণতাও যাবে কমে।

টানা ব্যবহারের বাইরে, স্ট্যান্ডবাই থাকা অবস্থায় যাতে চার্জ নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে আরো উন্নত অপারেটিং সিস্টেম। এর মধ্যেই ব্যাটারি ড্রেইন একেবারে কমিয়ে এনেছে আইওএস ১৩। অ্যানড্রয়েড ১০ এবং ১১-তেও যে ব্যাটারি ড্রেইন আরো কমাবে তা নিশ্চিত। আগের মতো পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন হয়তো আর হবে না।

ডিসপ্লে থেকে নচের বিদায়

বেজেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই ডিসপ্লের মধ্যে বড় কাটা জায়গা বা নচ অথবা পাঞ্চ হোল সহ্য করতে হচ্ছে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের। কিছু ফোন নির্মাতা পপআপ ক্যামেরা ব্যবহার করে নচ এড়িয়ে গেলেও সেই সিস্টেমেও আছে অনেক সমস্যা। বিশেষ করে ফোন পানিনিরোধী করতে চাইলে পপআপ ক্যামেরা ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ ধরনের অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করে অপো কিছুদিন আগে দেখিয়েছে, ডিসপ্লে না কেটেই তার মধ্যে ক্যামেরা স্থাপন করা সম্ভব। ক্যামেরার ওপরে ডিসপ্লের যে অংশ থাকবে সেটি ছবি তোলার সময় হয়ে যাবে স্বচ্ছ। ফলে সেলফি ক্যামেরার জন্য ডিসপ্লে কাটার প্রয়োজন হবে না। প্রযুক্তিটি সম্ভবত ফোনে এ বছরেরই প্রথম ব্যবহার করা শুরু হবে। পপআপ ক্যামেরার দুর্বলতা বা নচের দৃষ্টিকটুত্ব কোনোটাই এর জন্য প্রযোজ্য হবে না।

শুধু নচই বাদ যাবে না, ডিসপ্লের ওপরের গ্লাসেও হালকা নতুনত্ব আসতে যাচ্ছে। এত দিন ডিসপ্লের দুই পাশ হালকা বাঁকানো রাখা ছিল ফ্যাশন, এবার ওপরে এবং নিচের প্রান্তও হালকা বাঁকানো হবে। এ ডিজাইনের গ্লাস এত দিন অ্যাপল ওয়াচে ব্যবহার হয়ে আসছিল। এবার থেকে ফোনেও এটির দেখা মিলবে। সরাসরি কোনো কাজে না লাগলেও হাতের সঙ্গে মানাতে এবং দেখতে সুন্দর করার জন্যই ডিসপ্লেতে এই চারদিক বাঁকানো গ্লাস ব্যবহার করা হবে।

ক্যামেরা সেন্সরের সাইজ ও পিক্সেলের পরিমাণ বৃদ্ধি

ফোন ক্যামেরার সবচেয়ে বড় অন্তরায় এর জায়গা সংকুলান। এ জন্য বড় ক্যামেরা সেন্সর ব্যবহার করা যায় না স্মার্টফোনে। এটা ব্যবহার করার সুবিধা হচ্ছে—ক্যামেরা সেন্সর যত বড়, তত বেশি আলো সেটি শনাক্ত করতে পারে, ধারণ করতে পারে আরো বেশি ডিটেইলস। এ জন্য এ বছর ফোনগুলোতে আগের চেয়ে আরো বড় ক্যামেরা সেন্সর যুক্ত করা হবে। বিশেষ করে সনির তৈরি ১০৮ মেগাপিক্সেল রেজল্যুশনের ক্যামেরা মডিউলটি এ বছরের বেশির ভাগ মাঝারি এবং ফ্ল্যাগশিপ ফোনে ব্যবহার হওয়ার কথা রয়েছে।

মেগাপিক্সেলই ক্যামেরার মাপকাঠি নয়, লেন্সের মান এবং অ্যাপার্চারের ওপরও ছবির মান পুরোটাই নির্ভর করে। ক্যামেরার লেন্স নির্মাণে ব্যবহার করা হবে আরো উন্নত মানের গ্লাস এবং ফোকাসিং সিস্টেমেও নতুন প্রযুক্তির দেখা মিলবে এ বছর।

পিক্সেলের পরিমাণ বাড়ায় দুুটি সুবিধা পাওয়া যাবে, চাইলে উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি তোলা যাবে আবার পিক্সেল বিনিং ব্যবহার করে কম রেজল্যুশনের কিন্তু আরো উজ্জ্বল ছবি তোলা যাবে। ক্যামেরা ফোনের জন্য ২০২০ হবে সেরা একটি বছর।

Development by: webnewsdesign.com