বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, যাতে আরেকটা ‘সেই ধরনের’ নির্বাচন করা যায়। তবে এবার মানুষ রুখে দাঁড়াবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয় না। এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবে। তথাকথিত উন্নয়নের দোহাই দিয়ে জনবিক্ষোভ থামানো যাবে না।
সোমবার (১৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এম আজিজুল ইসলামের পরিচালনায় স্মরণসভায় আরো বক্তব্য দেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী পল্লি কবি জসীম উদ্দীনের কন্যা হাসনা মওদুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ঢাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী ভয়াবহ কাণ্ড! দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সরকার সেটাকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করছে এবং মন্ত্রীরা হেসে হেসে বলছে যে, দাম যেমন বেড়েছে, আয়ও তো বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? এরা জিডিপির (জাতীয় প্রবৃদ্ধি হার) শুভঙ্করের ফাঁকি দেখায়। জিডিপি কাকে বলে? সবকিছু মিলিয়ে যেটা আসে সেটাকে বলে জিডিপি।’
তিনি বলেন, এ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের আয় কম হচ্ছে। দেশের দারিদ্র্য আরো ২ শতাংশ বেড়েছে। এই বিষয়গুলো অস্বীকার করে অবলীলায় মানুষকে তারা বোকা বানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতা তারেক রহমান বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্ত করতে হবে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন আপাদমস্তক গণতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে বলেন তিনি এরশাদের মন্ত্রিসভায় গিয়েছিলেন। সেটাও তিনি গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থেই গিয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের যে কী অবদান রয়েছে তা আমরা জানি। ছাত্রজীবন থেকে তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেলে গিয়েছেন। এরপরে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি অবদান রেখেছেন।
মওদুদকে হত্যা করা হয়েছে: হাসনা মওদুদ
হাসনা মওদুদ বলেন, ‘কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মওদুদ আহমদ মারা গেছেন বলে যে কথা বলা হচ্ছে, এটা আমি ক্লিয়ার করতে এসেছি। তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। একদিন আপনাদের কাছে এই কথা আসবে ইনশাআল্লাহ। উনি সাহসী শক্তিশালী পুরুষ ছিলেন। মওদুদ আহমদকে কারা হত্যা করেছিল, তা একদিন প্রমাণ হবে।’
মওদুদ আহমদের লেখা দুটি অপ্রকাশিত বই প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, উনার ১৩টি বই প্রকাশ হয়েছে, দুটি অপ্রকাশিত। এগুলো উনি জীবিত অবস্থায় প্রকাশ করলে উনার সমস্যা হতো, তাই করা হয়নি।
হাসনা মওদুদ বলেন, আমি তারেক জিয়াকে অত্যন্ত স্নেহ করি। আমি বলতে চাই, ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে যদি ইন্ডিয়ার প্রাইম মিনিস্টার হতে পারে এবং সেই ছেলের ছেলেও যদি প্রাইম মিনিস্টার হওয়ার পথ পেতে পারে তাহলে তারেক জিয়া কেন হতে পারবে না।
Development by: webnewsdesign.com