একের পর এক বন্ধ হচ্ছে লোকাল ট্রেন

রবিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২২ | ৩:৪৯ অপরাহ্ণ

একের পর এক বন্ধ হচ্ছে লোকাল ট্রেন
একের পর এক বন্ধ হচ্ছে লোকাল ট্রেন
apps

লোকাল ট্রেনে ভাড়া তুলনামূলক কম। তবে ভ্রমণ আরামদায়ক ও নিরাপদ। তাই যাতায়াতে বেশিরভাগ মানুষের প্রথম পছন্দ ট্রেন। নিম্নবিত্ত মানুষের ভরসা বেশি লোকাল ট্রেনেই। এসব ট্রেন প্রায় প্রতিটি স্টেশনে থামে। আবার সিট না পেলে দাঁড়িয়েও যান অনেকেই। এগুলো থেকে আয় খুব একটা কম হয় না। কিন্তু নানা কারণে লোকাল ট্রেন চালানোয় আগ্রহ নেই রেলওয়ের। একের পর এক লোকাল ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ হচ্ছে। নতুন করে এগুলো চালু করায় মনোযোগ নেই কর্তৃপক্ষের। রেলওয়ে আন্তঃনগর ট্রেন নিয়েই বেশি মনোযোগী।

এসব ট্রেন না থাকায় কমে গেছে রেলের আয়ও। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেলওয়ে যাত্রী পরিবহন ও আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে, তার চেয়ে যাত্রী কমে যায় ২৫ শতাংশ। এতে আয় কমেছে ৩২ শতাংশ। এই চিত্র থেকেই বোঝা যায়, ট্রেন বন্ধ থাকায় শুধু যাত্রীরাই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রাস্ত হচ্ছে রেলও। ট্রেনগুলো বন্ধ রাখার কারণ হিসেবে রেলওয়ে বরাবরই বলছে ইঞ্জিন ও কোচের (বগি) অভাবের কথা। এই সংকট কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত ট্রেনগুলো চালু করা যাবে না বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রেলওয়ে রাজশাহীর শ্রমিকলীগ নেতা মেহেদি হাসান বলেন, ‘লোকাল ট্রেনগুলোতে সাধারণত গরিব লোকজন চলাচল করে। উপজেলা কিংবা গ্রামাঞ্চল থেকে শহর-নগরীকে যুক্ত করে এসব ট্রেন। এক সময় গ্রামের মানুষ এসব ট্রেনে করে কর্মস্থলে যাতায়াতের পাশাপাশি তাঁদের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য শহরে নিয়ে যেতে পারতেন। ট্রেনগুলো বন্ধ থাকায় গরিব লোকজন সেই সুযোগ থেকে এখন বঞ্চিত। রেলওয়ে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু ট্রেনই যদি বন্ধ থাকে, তাহলে এত প্রকল্প দিয়ে কী হবে?’

ট্রেন বন্ধ থাকার বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘রেলে ইঞ্জিন ও কোচের সংকট রয়েছে। অনেক দিন জোড়াতালি দিয়ে আমরা অনেক ট্রেন চালিয়েছি। কিন্তু এখন অবস্থা এমনই যে, নতুন ইঞ্জিন ও কোচ না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকা ট্রেনগুলো চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।’ তিনি লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেনগুলোতে সাধারণত গরিব লোকজন চলাফেরা করে স্বীকার করে দাবি করেন, সেজন্য এসব ট্রেন দ্রুত ফের চালু করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একেবারে লক্কড়ঝক্কড় ইঞ্জিন ও কোচ দিয়ে লোকাল ট্রেনগুলো চালু করা হয়েছিল। এসব ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা এখন আর নেই। পুরোনো অনেক কোচও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই লোকাল ট্রেনগুলো চালু করতে সময় লেগে যেতে পারে।
করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চে সব যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে চালু হয় কিছু ট্রেন। গত ২২ ফেব্রæয়ারিতে বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে গেলে চলাচল শুরু করে আন্তঃনগর ট্রেন। কিন্তু লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন আর চালু হয়নি।

Development by: webnewsdesign.com