ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৫৮৬ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁস হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ তালিকায় রয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এসব তথ্য প্রকাশ করে একটি লো-লেভেল হ্যাকিং প্ল্যাটফর্ম প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলেছে।
শুক্রবার বিকেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযুক্তি কর্মী ফাঁস হওয়া এসব তথ্য সাংবাদিকদের প্রদান করেন। তবে গত ৩ এপ্রিল বিজনেস ইনসাইডার এ তথ্য সবার আগে প্রকাশ করেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ব্যবহারকারীদের ফোন নম্বর, ফেসবুক আইডি, পুরো নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, প্রোফাইল এবং ইমেইল ঠিকানা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনে সংশ্লিষ্টতার তথ্যসহ প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত কিছু তথ্য ফাঁস করেছে চক্রটি।
তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ সাবেক এক শিক্ষক, সিনিয়র শিক্ষক, শিক্ষক সংগঠনের কয়েকজন নেতা, অনুষদীয় ডিন, বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা প্রকৌশল দপ্তর, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রভাবশালী কয়েকজন ছাত্র নেতাদের কিছু ব্যক্তিগত তথ্য উঠে এসেছে।
এ তালিকার বাইরেও ফোন নম্বর অনুসন্ধান করে বেশ কিছু আলোচিত শিক্ষক ও ছাত্রনেতার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া যাদের ফেসবুক প্রোফাইলে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ উল্লেখ নেই তাদের সংখ্য খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে তথ্য ফাঁস হওয়া সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আইসিটি সেলের ডাটাবেজ প্রোগ্রামার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই ডাটাগুলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে হ্যাক হয়ে থাকতে পারে। এসব ডাটা ব্যবহার করে বিভিন্ন গবেষণা হতে পারে। যেমন একজন ব্যক্তি অনলাইনে কি ধরনের কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, গুগলে কোন ওয়েবসাইট সার্চ করেন। এছাড়া ডাটাগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেসবুকে ব্যক্তিগত ছবি, গোপন কথোপকথন, রের্কড এ ধরনের তথ্য থাকলে তা নিয়ে সমস্যা হতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কোন তথ্য গোপন থাকে না। ফলে নিজেদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা জরুরি।’
হ্যাকারদের টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের তাদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মনণ। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে সাধারণত যে সকল তথ্য দেওয়া থাকে সেগুলো ফাঁস হয়েছে। যেমন ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি এসব তথ্য আমরা সব জায়গায় ব্যবহার করে থাকি। তবে গোপনীয় কোন তথ্য থাকলে সেটা সমস্যা হতে পারে। এছাড়া টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের তথ্য ব্যবহার করে হ্যাকাররা কিছু করতে পারবে।’
উল্লেখ্য, এ তালিকায় ৩৮ লাখ বাংলাদেশিসহ বিশ্বের ১০৬টি দেশের ৫৩ কোটি ৩০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর নাম প্রকাশ করেছে প্ল্যাটফর্মটি। অনেকটা বিনামূল্যে এসব তথ্য অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। এর আগে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বিশ্বের বৃহত্তম এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।
Development by: webnewsdesign.com