আ’লীগের একাধিক প্রার্থী মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে, মাঠে নেই অন্য দল

মঙ্গলবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২০ | ৮:১৪ অপরাহ্ণ

আ’লীগের একাধিক প্রার্থী মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে, মাঠে নেই অন্য দল
apps

মৌলভীবাজার পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ’লীগের একাধিক প্রার্থী ভীতরে ভীতরে প্রচারণা শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিংও করছেন। তবে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই বিএনপি বা অন্য দলের। এদিকে বর্তমান মেয়র ফাঁকা মাঠে যাতে গোল দিতে না পারেন সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিরা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের মতো এ নির্বাচন নিয়ে তেমন আমেজ নেই পৌর নাগরিকদের মধ্যে। নাগরিকরা বলছেন, ভোট প্রয়োগের সুষ্ঠ পরিবেশ না থাকায় পৌর নির্বাচন নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই।

জানা যায়, ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মৌলভীবাজার পৌরসভা। পৌরসভার আয়তন ১০.৩৬ বর্গ কিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ওই পৌরসভা। ১৯৩২ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচন হন খান বাহাদুর দেওয়ান আলাউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরবর্তীতে ১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৩ সালে “ক” শ্রেণীতে উন্নতি হয়। পৌরসভার মোট ভোটার ৩৫ হাজার ৯৯ জন। এর মধ্যে পুুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ৯’শ ৮৬ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১৬ হাজার ১’শ ১৩ জন।

এদিকে প্রথম দাপে জেলার বড়লেখা পৌরসভার নির্বাচন হবে ২৫ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই তৎপরতা শুরু করেছে মৌলভীবাজার পৌরসভার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সবাই যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে বর্তমান মেয়রের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী এখনও চোখে পড়েনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌলভীবাজার পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান ও জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল। অন্য দলের প্রার্থীদের নাম এখনও আলোচনায় আসেনি।

২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারী আ’লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপি মনোনীত ধানের শীর্ষের অলিউর রহমানকে ৬ হাজার ২’শ ৭ ভোটে পরাজিত করেন তিনি।

বর্তমান মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভার চেহারা আগের চেয়ে অনেকটা বদলেছে। অনেকাংশে জলাবদ্ধা মুক্ত হয়েছে পৌর শহর। শহরের একাধিক রাস্তা সম্প্রসারণ করতে শতাধিক দেয়াল ভেঙ্গে প্রসংশিত হয়েছেন মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান। সাবেক মেয়রের রেখে যাওয়া ১৩ কোটি টাকার ঋণও পরিশোধ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে পৌরসভার শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ নিয়েছেন ডায়নামিক এই জননেতা। তবে সফলতার পাশাপাশি রয়েছে কিছু ব্যর্থতা। পৌর নাগরিকরা বলছেন, সাম্প্রতিক কিছু কর্মকান্ডে অনেকটা বিতর্কিত হয়েছেনও তিনি। তবে সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে নির্বাচনকালিন সময়ে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান।

পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে অনেকেই পৌরসভার মসনদে বসেছেন। কিন্তু বর্তমান পৌর মেয়রের মতো ঝুঁকি নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করা অনেক মেয়রের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এমনটিই মন্তব্য করেন পৌর নাগরিকবৃন্দ। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ভোট গ্রহণের সুষ্ঠ পরিবেশ না থাকায় নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই। তবে দলকে চাঁঙ্গা রাখতে একজন প্রার্থী দেয়া হবে। প্রার্থী বাছাই নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, দলীয় মার্কা টিকিয়ে রাখতে হয়তো একজন প্রার্থী দিবো। তবে নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ না হলে প্রার্থীরা ভোটে অংশ গ্রহণ থেকে আগ্রহ হারাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এ সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল বলেন, আমাদের বলয় থেকে আমাকে সমর্থন করা হয়েছে। দলীয় প্রতীকের জন্য কাজ করছি। এ গ্রেডের মৌলভীবাজার পৌরসভায় মেয়র পদে কোনো টেন্ডারবাজকে বসানো ঠিক নয়। দলীয়ভাবেও পরিষ্কার বলা হয়েছে কোনো ঠিকাদারকে যাতে জনপ্রতিনিধি বানানো না হয়। কিন্তু মৌলভীবাজার পৌরসভায় দলীয় এ নিয়ম মানা হচ্ছে না।

বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, দল মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে এখন পর্যন্ত আমার প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে কাউকে মাঠে দেখছি না। তিনি আরও বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একজন খাদিম হিসেবে কাজ করেছি। নিজের চেয়ার এবং দলীয় পদবীর অপব্যহার করে কখনও নীতিবহির্ভূত কাজ করিনি এবং আগামীতেও করবোনা। পৌরবাসীর উন্নয়নে দল-মতের উর্ধ্বে উঠে সকল দলের কর্মীদের সহযোগীতা পেয়েছি। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কোনো কাজকে মূল্যায়ন করিনি।

Development by: webnewsdesign.com