প্রথমেই বলতে হয় যে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা, আমরা ভুলবনা ভুলবনা। সে দিনের সেই স্বাধীন বাংলার নিজের মায়ের মুখের ভাষার জন্য কাধে তুলে নেওয়া সেই বীর ও বীরঙ্গনা সহ সকল বাংলাভাষা কামী বাঙালির ৯ মাস যুদ্ধে শহীদ আর সম্ভ্রম হারনো নির্মমতা কখনও কখনও বর্তমান স্বাধীনতার আনন্দের হাসিকে যেন ম্লান করে দেয়। আমাদের এই অর্জন কারো চেয়ে কম নয়। অসাম্প্রদায়িক বাংলার জনগন যেন সংকল্প করে বীরের বেশে পাকবাহিনী কে মথানত করে বিজয়ের অগ্নিশিখা জ্বালিয়েছিল বিশ্বের মানচিত্রে।
তাই বলতেই হয় “আমি বিজয় দেখিনি বিজয়ী নিশান বুকে ধরেছি”।১৯৭১ সালের বাংলার পতাকার নিচে হাতে হাত রেখে অজানা শহীদদের প্রান বিলিয়ে দেওয়া বাঙালি জাতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা রেখে আগামীর দিন গুলোকে বঙ্গবন্ধুর ‘”সোনার বাংলা”‘ গড়ার অঙ্গীকার নিয়েই আজ আমাদের এই পথ চলা।
আমরা তাদেরও ভুলবোনা যারা পাকবাহিনীর দালালি করে মা-বোনদের সম্ভ্রম ও ধন সম্পদ লুটেরা বাহিনী রাজকার আলবদদের। আজ আমিও যেন স্বপ্ন দেখি রক্তের গন্ধপাই লাশের উপর লাশ করুণ আর্তনাদ আর বাঁচার লড়াই। প্রতিটি শ্বাসে আমার উপলব্ধি হয় আমাদের বিজয়ের সেই দিন ১৬ই ডিসেম্বর।
কাদা মাটি শরীরে মেখে ঢাল তলোয়ার যুদ্ধাস্ত্র ছাড়াই পাকবাহিনীর সাথে যখন ভুখন্ড আর মাতৃ ভাষার তুমুল লড়াই চলছিল তখন বন্ধু দেশের হাত বাড়ানোর পিছনে কোন কারন ছিল কিনা সঠিক উদঘটন আমার জানা নেই তবে সহযোগীতার হাত ছিল তখন মজবুত ও ভাতৃত্ব সমভাবাপন্ন। যারা আমাদের শত্রমুক্ত কারার জন্য বাড়িয়েছিল বন্ধুত্বের হাত ভুলবোনা তোমাদের।
১৯৭০ সালের বাংলার জনগনের ভোটের নিরঙ্কুশ জয় পশ্চিম পাকিস্তানকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। পরাজয়ের গ্লানি টানতে হবে ভাবতেও পারেনি পাকিস্তান। অত্যাচারী শাসকদের রুখতে অবশেষে বঙ্গবন্ধু’র সেই ৭ই মার্চের অগ্নিঝড়া ভাষণ বাঙ্গালীর অস্তিত্ব বোধের মশাল কে সেই দিন একসাথে জেগে ওঠার আহ্বান করেছিল। মুত্তির সংগ্রামে লাখো শহীদের প্রান চলে গেছে, সুরক্ষিত ছিলনা মা-বোনদের ইজ্জতও, হারিয়েছি যা হয়তো আজ পূরণ হবার নয়। সেই অর্জন যে আজ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ কে বিশ্ব মানচিত্রে ঠাই করে দিয়ে গেছে।
এই মুক্তির স্বাধ পেতে শত্রুর সেই ভয়াল কালো থাবা, সেই ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা সহ সারাদেশে অমানবিক অত্যাচার, আর কাপুরুষ এর ন্যায় পিছন থেকে হটাৎ নিরস্ত্রহীন বাঙ্গলীর ওপর সিংস্র আক্রমণ কলঙ্কিত সেই ৯ মাসের রক্তের রক্তিম সূর্যোদয় আজও আকাশের চাঁদের কলঙ্ককে হার মানায়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকালের সূর্যোদয় যেন নতুন স্বাধীনতার লাল সবুজের বিজয় নিশান কে একটু ছুয়ে দেয়, আর পতাকা বাংলার আকাশে উড়তে থাকে ।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস টিকে সম্মান
যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে । সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। সকাল থেকে সারাদেশ এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করে। এছাড়াও শহীদদের জন্য দোয়া ও তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
Development by: webnewsdesign.com