রাজধানীর খুচরা বাজারে তিন দিনের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা। এ ক্ষেত্রে দেশি পেঁয়াজের দামই বেড়েছে বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নয়, বরং দাম বেড়েছে দেশে পেঁয়াজের মজুদ কমে আসায়। তাঁরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের পেঁয়াজের মজুদ প্রায় শেষের দিকে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহও কম। ফলে নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশি থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নতুনবাজার, জোয়ার সাহারাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। গত শনিবারও এই পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া আমাদানি করা পেঁয়াজ পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নদ্দা বাজারের খুচরা বিক্রেতা আব্দুল বলেন, ‘রবিবারও দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন আমাদেরই ৬০ টাকার বেশিতে কিনতে হয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পাইকারা রা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়।’
গতকাল রাজধানীর পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের শেষ দিকেও এই দামেই বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে এই পেঁয়াজ ছিল ৩২-৩৩ টাকা কেজি।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. মাজেদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ না এলে দেশি পেঁয়াজের দাম কমবে না।’
চট্টগ্রামেও বেড়েছে :- চট্টগ্রাম নগরীতে ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এতটাই কমেছিল যে ভ্যানগাড়িতে গত নভেম্বরের শেষে তিন কেজি বিক্রি হচ্ছিল ১০০ টাকায়। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছিল কেজি ৩০ টাকায়। গতকাল খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজি ৪১ টাকায় আর ভারতের পেঁয়াজের কেজি ৩৬-৩৭ টাকা।
খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় আমদানি কমেছে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে। তবে তাঁর দাবি মিলছে না কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন) দপ্তরের হিসাবে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে শুধু নভেম্বর মাসেই আমদানি হয়েছে ১৯ হাজার ২২৫ টন। আর ডিসেম্বরের চার দিনেই আমদানি হয়েছে পাঁচ হাজার ১৩৫ টন। ফলে আমদানি কমেনি, বরং কিছুটা বেড়েছে। তবে ভারত থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে আমদানি কিছুটা কমেছে। এর মূল কারণ দেশে পেঁয়াজের দাম কমা।
চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ দপ্তরের উপপরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘২০২১ সালের জুলাই থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ হাজার ২০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এর বেশির ভাগই টিসিবির জন্য। কিছু পেঁয়াজ এসেছে বেসরকারিভাবে, কিন্তু পরিমাণ খুবই সামান্য।’ তিনি বলেছেন, ‘অনেক আমদানিকারক বিপুল পরিমাণ আমদানি অনুমতিপত্র নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বাজারে দাম কমে যাওয়ায় আর আমদানি করছেন না। এ কারণে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বড় আকারে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।’
হিলিতে দাম কমছে :- আমদানি কম হলেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে দুই টাকা। হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী বাবুল বলেন, বাজারে দেশীয় পাতা পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে ভারতীয় পেঁয়াজের।
বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ছে।
Development by: webnewsdesign.com