আপেলের একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য অসুস্থ হলে চিকিৎসকরা রোগীকে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও ভালোবেসে দিনে একটা বা দুটা আপেল অনেকেই খান।
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ-এর গবেষকদের মতে, আপেল খেলে অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ২৩ শতাংশ কমে যায়। তাদের দাবি, আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনল থাকে, যা অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা আপেলের মধ্যে ট্রিটারপেনয়েডস নামের এক ধরনের উপাদানের সন্ধান দিয়েছেন। এই ট্রিটারপেনয়েডস স্তন, লিভার এবং কোলোন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
এ ছাড়া আপেল খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২৮ শতাংশ কমে যায়। কারণ, আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার ভারসাম্য সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
তবে এই উপকারী ফলের কয়েকটি ক্ষতিকর দিকও রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যহানি, এমনকি মৃত্যুরও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে! তবে চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১) পরিবারের কারও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে আপেল থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ, আপেলের গায়ে লেগে থাকা মোম অ্যালার্জির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। মোমে যে সালফার ডাই-অক্সাইড থাকে, তার প্রভাবে গলা খুসখুস করা, বমি বমি ভাবসহ একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২) কৃত্রিম উপায়ে আপেলের ফলন বাড়াতে এবং কীট-পতঙ্গের হাত থেকে বাঁচাতে আপেলেই যে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, একাধিক সমীক্ষায় তার প্রমাণ মিলেছে। আমাদের শরীরে এই কীটনাশকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মারাত্মক ক্ষতিকর! পানি দিয়ে ধোওয়ার পরও আপেলকে কীটনাশকের প্রভাবমুক্ত করা যায় না। ফলে স্বাস্থ্যহানির একটা ঝুঁকি থেকেই যায়।
৩) আপেলের বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর! আপেলের বীজ পেটে চলে গেলে তা স্বাস্থ্যহানির পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় অনেকখানি। একটা বা দুটো বীজে তেমন কোনো মারাত্মক ক্ষতি না হলেও পেটে খিঁচুনি, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, অস্বাভাবিক ক্লান্তিসহ একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে বেশ কয়েকটা আপেলের বীজ চিবিয়ে খেলে তা থেকে শরীরে মারাত্মক বিষক্রিয়া হতে পারে। আপেলের বীজে থাকা অ্যামিগডালিন অত্যাধিক পরিমাণে শরীরে মিশলে তা রক্তের অক্সিজেনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। বাধাপ্রাপ্ত হয় রক্তে অক্সিজেনের স্বাভাবিক সরবরাহ। ফলে মিনিট খানেকের মধ্যেই মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!
তাই যত খুশি আপেল খান। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখিত এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই চলবে।
Development by: webnewsdesign.com