বড়লেখার তালিমপুর ইউনিয়নের খুটাউরা গ্রামে গত ৫ জানুয়ারী সংগঠিত মারামারির ঘটনা নিয়ে অবশেষে আদালতের নির্দেশে মামলা রেকর্ড করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মৌলভীবাজরে ১২জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন খুটাউরা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী সাজনা বেগম। তিনি তাহার অভিযোগে মারামারির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/ ৩২৫/৩০৭/৩২৬/ ১১৪/৫০৬(২)/১০৯ দ:বি: ধারায় অভিযোগটি আমলে নিতে আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাজনা বেগমের অভিযোগটি আমলে নিয়ে রেকর্ড করতে বড়লেখা থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে পরদিনই বড়লেখা থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে এবং সকল আসামীর বিরোদ্ধে পরোওয়ানা জারি করে। মামলা নং জি.আর-০৬/২২ইং। মামলা রেকর্ডের পর বিবাদীপক্ষ গত ১৩ জানুয়ারী ৭,৮,১০,১১ ও ১২ নং বিবাদী আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করে। আদালত ৭,৮,১০ ও ১২ নং বিবাদীর জামিন মঞ্জুর করলেও ১১নং বিবাদীর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
এর পর থেকেই বিবাদীপক্ষ বাদিনী ও তার পরিবারকে মামলা প্রত্যাহার করতে হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা প্রত্যাহার না করলে অপহরণ, ধর্ষন, হত্যা করবে বলে অব্যাহত হুমকি দিয়ে বলে বাজারের দোকানপাট খুলতে দেয়া হবেনা, প্রয়োজনে লুটকরা হবে। বাচঁতে হলে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এদিকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অদৃশ্য কারনে প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করছেনা বড়লেখা থানা পুলিশ।বর্তমানে প্রভাবশালী বিবাদীদের ভয়ে বাদীনি সাজনা বেগম নিজে ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের বাচাঁতে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ১নং বিবাদী এলাকার ক্ষমতাশালী, প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাহার বিরোদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনা, তিনি সরকারী দলের লোক পরিচয় দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা আদায় করেন। তারা বলেন পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করলে বাদিনীকে পালিয়ে থাকতে হতো না। স্থানীয়রা আরো বলেন পরোওয়ানা থাকার পর ১নং বিবাদী কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় থানায় যাতায়াত করে তা আমাদের ভোধগম্য নয়। আমরা আশা করি দ্রুত বিবাদীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে বড়লেখা থানা পুলিশ।
ইতিপূর্বে ১নং বিবাদী বিলাল আহমেদের বিরুদ্ধে হাকালুকি দারুসুন্নাহ মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। যাহা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, এবং প্রতিবাদে মানববন্ধন ও হয়েছে। বিলালের ২য় ছেলে নয়ন হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গত ১৫/১০/২০২০ ইং তারিখে স্কুলে যাওয়ার পথে মোবাইল নাম্বার দেওয়ার জন্য তাহার গলায় ছুরি ধরে। এসব ঘটনা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
উল্লখ্য পূর্ব থেকে বাদিনী-বিবাদীর মধ্যে বাড়ির সীমানার জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। এ ব্যাপারে স্থানীয় মুরুব্বিদের স্মরনাপন্ন হলেও কোন সমাধান হয়নি। বিধায় এই সমস্যা নিয়ে বিগত আড়াই বছর পূর্বে ১নং বিবাদী বেলালের ছেলে ছায়মন আহমদ উজ্জল মামলার ৪নং স্বাক্ষী জখমী সাদিকুর রহমানকে দা দিয়ে আঘাত করলে তাহার বাম হাতের রগ সহ কেটে যায়। প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ করেও হাত ঠিক করা যায়নি। বর্তমানে তাহার বাম হাত একেবারে অকেজো হয়ে আছে। সেই ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে বিবাদী (বিলাল গং) এর বাড়ি থেকে দা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সেই ঘটনার মামলা এখনও চলমান রয়েছে। যার নং জি.আর ৫৮/২০। সেই মামলা উত্তোলন করার জন্য গত ৫ জানুয়ারী চাপসৃষ্টি করে, এবং দলবদ্ধ হয়ে আক্রমন করলে মারামারি ঘটনার সূত্রপাত হয়।
ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করে বাদীপক্ষ। পরে গত ১০ জানুয়ারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মৌলভীবাজরে ১২জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন খুটাউরা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী সাজনা বেগম।
Development by: webnewsdesign.com