আজ রাতে মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি কর্মীদের প্রথম ফ্লাইট

সোমবার, ০৮ আগস্ট ২০২২ | ৬:৩১ অপরাহ্ণ

আজ রাতে মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি কর্মীদের প্রথম ফ্লাইট
apps

শ্রমবাজার খুলে দেয়ার পর অবশেষে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন বাংলাদেশের কর্মীরা। সোমবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইটে যাচ্ছেন কর্মীদের এ দলটি।মালয়েশিয়ার এই ফ্লাইটে দেশটির জিমাত জায়া কোম্পানিতে কাজের জন্য ৫৩ কর্মী যাচ্ছেন।

তারা প্রত্যেকেই যাচ্ছেন মেসার্স ক্যাথারসিজ ইন্টারন্যাশনাল নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। আগামী কয়েক দিনে জিমাত জায়াসহ মালয়েশিয়ার অন্যান্য কোম্পানিতে কাজের জন্য আরও কয়েকশ বাংলাদেশি কর্মীর ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে এত দিনের বাধা দূর হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা।বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এ বছরের এপ্রিলে জিমাত জায়া কোম্পানির এই কর্মীদের প্রাথমিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই দিন জিমাত জায়া কোম্পানিতে ১১০ জন এবং রেইনবো পেপার সাপ্লাই কোম্পানিতে ১৫ জনসহ মোট ১২৫ কর্মীর অনুমোদন দেয়া হয় ক্যাথারসিজ ইন্টারন্যাশনালকে।

এসব কর্মী যাওয়ার মধ্যদিয়ে মালয়েশিয়ায় বহুদিন ধরে বন্ধ থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের শ্রমবাজার আবার উন্মুক্ত হলো। এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর লেবার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাতে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০০ কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন জানিয়েছে। আমরা দ্রুত যাচাই-বাছাই শেষে কর্মী নিয়োগের সত্যায়ন দিচ্ছি। এসব কর্মী দ্রুতই বাংলাদেশ থেকে আসবেন।’দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া তাদের শ্রম চাহিদা পূরণের জন্য স্থানীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশসহ বিদেশি কর্মীদের ওপর নির্ভর করে থাকে। কিন্তু গত ৩ বছর মহামারির কারণে নতুন করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ স্থগিত থাকায় দেশটিতে চরম শ্রমিক সংকট তৈরি হয়। এই শ্রমিক সংকট নিরসনে ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে মালয়েশিয়া।

এ বছরের ২ জুন ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেও বাংলাদেশ থেকে এতদিন পর্যন্ত কোনো কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি দুই দেশ। এছাড়া এজেন্সির সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘ সময় পার করে দেয় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ার হাইকমিশন। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য এখন পর্যন্ত ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।আরও নানা কারণে কর্মী পাঠাতে দীর্ঘসূত্রতা দিন দিন বাড়ছিল। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তাদের ডিমান্ড লেটার সত্যায়নের পরিবর্তে কখনো মেডিকেল সেন্টারের অনুমোদন, কখনো ডেটা ব্যাংকের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে বাধ্যবাধকতা, কখনো র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং, কখনো-বা মালয়েশিয়ার কাছে মন্ত্রণালয়ের নতুন সিস্টেম সমন্বয় করার প্রস্তাব।

ফলে বিপাকে পড়েন মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি কর্মীরা। এতে নেপাল থেকে কর্মী নেয়ার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা।কিন্তু সব বাধা কাটিয়ে সোমবারের ফ্লাইটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জনবল পাঠানোর দরজা এবার উন্মুক্ত হলো। জনশক্তি রফতানিকারকরা বলছেন, বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। দেশটির যে চাহিদা, তাতে এবার মালয়েশিয়ায় আরও অন্তত ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী যেতে পারবেন।

Development by: webnewsdesign.com