অধ্যাপক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কথায় কথায় ভয় পান। এমনকি অহেতুক ভয়ের কারণে মানুষ দূরদূরান্তে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কারও কারও বুক ধড়ফড় করে, আবার কারও বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা উদ্ভব হয়। একটা কথা পরিষ্কার, ভয় দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না কিন্তু রোগী নিজের ভিতর ভয় অনুভব করে। এটা কোনো ধরনের অভিনয় নয়, নাটক নয় বা দুষ্টামী নয়।
এটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার সময় সেলিম সাহেব তার ১০ বছরের ছেলেকে সঙ্গে এনেছেন, কারণ পথে যদি পড়ে যায় অথবা অসুস্থ হয়ে যায় ছেলে ধরতে পারবে। লোক থাকলে সাহস লাগে, চলাফেরা করা যায়। অনেককে পানির বোতল সঙ্গে নিয়ে বের হতে হয়- যদি অসুস্থ হয়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়, বুক ধড়ফড় করে, শরীর কাঁপে মনে হয় অজ্ঞান হয়ে যাবে। রোগীরা ভয়ের উৎস অর্থাৎ যেখানে ভয়ের সূত্রপাত সেগুলো এড়িয়ে চলে। সঙ্গে থাকে অস্বাভাবিক দুশ্চিন্তা, শুচিবাই ও বিষণœতা। মজার বিষয় হলো রোগীরা ভয় পায় কিন্তু অন্যেরা ভয় পায় না।
অন্যরা এসব দেখে হাসে ও ন্যাকামি মনে করে। কেউ কেউ মনে করে আলগা দোষ কি না? এ ধরনের ভয় মনে হয় রোগীরা ইচ্ছা করে আসলে তা নয়। উপরের সেলিম সাহেব এগারো ফোবিয়া নামক অসুখে ভুগছেন। কমবেশি ভয় অনেকেরই লাগে কিন্তু এই ভয়ের কারণে যখন কোনো ব্যক্তির কাজের ব্যাঘাত ঘটে, চলাফেরা সীমাবদ্ধ হয়ে যায় এবং নিজের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয় তখনই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তাই এসব লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবহেলা করা ঠিক নয়। প্রাথমিক অবস্থা থেকে এ বিষয়ে যত্নবান ও সচেতন হলে জটিলতা এড়ানো যায়। লেখক: মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল, ঢাকা।
Development by: webnewsdesign.com