তিনদিনের ঢাকা সফর শেষে ফিরে গেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান। শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশে তার তিনদিনের সফর সম্পন্ন করে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ দিকে অনেক দৌড়ঝাঁপ করেও যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পায়নি বিএনপি। এ নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সাক্ষাৎ না পাওয়ার বিষয়টিকে দলের কূটনৈতিক শাখার ব্যর্থতা হিসেবে মনে করেছেন বিএনপির একাংশ।
তবে বিএনপির কূটনৈতিক শাখার প্রধান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল না। প্রোগ্রাম হলে তো তারাই করবে- এটাই নিয়ম। এটা তো বিএনপির বিষয় নয়।
বিএনপির এক নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষের শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু মনে করে বিএনপি। সেখানেও ব্যর্থতা দেখা গেল। এজন্য সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তির না থাকা এবং কূটনীতিতে দলের ভুল কৌশলকে দায়ী করেন ওই নেতা। তিনি বলেন, সাক্ষাৎ হলে অন্তত দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে দেশে গণতন্ত্রহীনতা, সুশাসনের অভাব, দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া যেত।
দলীয় সূত্র জানায়, স্টিফেন বিগানের আসার খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বিএনপির কূটনীতিক শাখার পক্ষ থেকে দেশটির দূতাবাসের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হয়। স্টিফেনের সাক্ষাৎ পেতে প্রথমে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেত্রী দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। সাক্ষাতের জন্য ওই নেত্রী তার নিজের নাম ও দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু দূতাবাস সাক্ষাতের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এরপর দলের কূটনীতিক শাখার আরেক সদস্য সাক্ষাতের চেষ্টা চালান। তার চেষ্টাও কাজে লাগেনি।
বিএনপির কূটনীতিক শাখার একজন সদস্য বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করলে হয়তো সাক্ষাৎ পাওয়া যেত। সাক্ষাতের জন্য দু’জনের নাম দূতাবাসে পাঠানো হলেও প্রটোকল অনুসারে তাদের সঙ্গে দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা নয়। ফলে সে চেষ্টা সফল হয়নি।
উল্লেখ্য, স্টিফেন বিগান ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মার্কিন উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ১০০ ভেন্টিলেটর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বিগান।
তার এ সফরে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের একই ভিশন উম্মুক্ত এবং অন্তর্ভুক্তমূলক ও শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। আট লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
Development by: webnewsdesign.com