বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে ৭ ঘণ্টা গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়।কিন্তু খালেদা জিয়ার জন্য মাত্র ৭ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে পারলেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা। কর্মসূচির শুরু থেকেই নয়াপল্টনের অলিগলিতে অবস্থিত বিভিন্ন দোকানে নেতাকর্মীদের খেতে দেখা গেছে। গণঅনশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই খাওয়া-দাওয়া চলে।
গণঅনশনে উদ্বোধনী বক্তব্যে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা গণঅনশন। তাই কর্মসূচি থেকে উঠে গিয়ে কেউ কিছু খাবেন না। কর্মসূচি শেষ না পর্যন্ত আপনারা সবাই যার যার জায়গায় বসে থাকবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফুটপাতে এবং অলিগলিতে অবস্থিত বিভিন্ন দোকানে গিয়ে খাওয়া শুরু করেন। অনেকেই রুটি, চা, সিংগারা খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বাদাম-মুড়িও খাচ্ছেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে শনিবার গণঅনশন কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সকাল ৯টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এবং সামনে বিএনপির উদ্যোগে এ কর্মসূচি শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া গণঅনশন কর্মসূচি চলে ৭ ঘণ্টাব্যাপী।
সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, দুপুর ১টার আগে থেকেই নয়াপল্টনের বিভিন্ন হোটেলে বসে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভাত খাচ্ছেন। অনেককে আবার রুটি খেতে দেখা গেছে।
কর্মসূচি শেষে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী পানি পান করিয়ে নেতাকর্মীদের গণঅনশন ভাঙান।
কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির সিনিয়র নেতারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে চেয়ার নিয়ে বসেন এবং কর্মীরা কার্পেট ও শামিয়ানা বিছিয়ে সড়কের ওপর বসে কর্মসূচি পালন করেন
গণঅনশনকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের নিচে সমবেত হতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে খণ্ড খণ্ড মিছিল এবং ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে যোগ দেন। এই কর্মসূচিতে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিএনপি গণঅনশন কর্মসূচি ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আশপাশের এলাকায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কর্মসূচি ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসমাগম ঘটিয়ে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও রয়েছে। এছাড়া নয়াপল্টনে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন এ্যানী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের সঞ্চালনায় গণঅনশনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আযম খান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
Development by: webnewsdesign.com