পুলিশি হয়রানির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ায় ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে থানা হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাসের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃদ্ধ সাইফুদ্দিন প্রামাণিক বাদী হয়ে ওসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোরশেদুল ইসলাম ও নিখিল কুমার ঘোষ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে মামলা করেন সাইফুদ্দিন প্রামাণিক। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদীর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটির জুডিসিয়াল তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ১০ মাস আগে উপজেলার বেতবাড়ী গ্রামে একটি মারামারির ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতার অভিযানের নামে পুরো গ্রাম তছনছ করে পুলিশ। টাকা নিয়ে বাণিজ্য করতে থাকে পুলিশ। চাহিদা মতো টাকা না দেওয়ায় প্রতিরাতেই ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে হয়রানি করা হয়। একাধিক ব্যক্তিকে মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এসব বিষয় নিয়ে গ্রামবাসী সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশি নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশে ক্ষিপ্ত হন ওসি দীপক কুমার দাস। তিনি সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যক্তিদের একে একে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে নতুন নতুন মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠাতে থাকেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ মে রাতে বৃদ্ধ সাইফুদ্দিন প্রামাণিককে আটক করে থানায় নিয়ে ওসি ও দুই এসআই মিলে মারপিট করেন এবং ২৫ মে একটি চাঁদাবাজি মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করেন। বিচারক জামিন মঞ্জুর করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে মামলা দায়ের করেন সাইফুদ্দিন প্রামাণিক।
সাইফুদ্দিন প্রামানিক জানান, আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। সাংবাদিকদের কাছে পুলিশি হয়রানির কথা বলাতেই আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। আমি অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও দুই এসআই হাত ধরে রাখেন আর ওসি নিজে আমাকে মারপিট করেন এবং বলেন, তোকে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সাধ মিটাই আগে। তাদের নির্যাতনে আমার দু-হাতের তালু, মাথায়, ডান হাতে, গলার পেছনে, তলপেটে, পিঠে এবং দুই কানে মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।
উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাইফুদ্দিন প্রমাণিকের বিরুদ্ধে অনেক আগের একটা মামলা ছিল। তাকে সেই মামলাতেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।
সূত্র- বাংলানিউজ
Development by: webnewsdesign.com