১৮২ যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কের পর ভিডিও সংরক্ষণ, অত:পর…

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২০ | ৬:০২ অপরাহ্ণ

১৮২ যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কের পর ভিডিও সংরক্ষণ, অত:পর…
apps

দুই ব্যবসায়ী পরিবারের দুই যুবকের কাছ থেকে ১৮২ নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভারতের কলকাতায় এ ঘটনা ঘটেছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, এ অভিযোগে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) আদিত্য আগরওয়াল ও অনীশ লোহারুকা নামের ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কর্মচারী কৈলাশ যাদবকে। এদিনই তাদেরকে স্থানীয় আদালতে তোলা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত তাদেরকে পুলিশি নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠায় আদালত।

অভিযোগ আছে, তারা নির্যাতিত নারীদের কাছে ১০ লাখ রুপি করে দাবি করেছেন। হুমকি দিয়েছেন অর্থ না দিলে ওইসব নারীর সঙ্গে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেবেন। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে কলকাতায়।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তিন চার মাসের অনুসন্ধানে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৮২ জন নারীর ভিডিও দৃশ্য।

আদিত্য আগরওয়ালের পরিবার সারাদেশে আছে এমন একটি পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে অনীশ লোহারুকার পরিবার কলকাতা শহরে বহু হোটেলের মালিক। এ পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, অনীশকে ফাঁসানো হয়েছে। এ পরিবারের একজন সদস্যকে পুলিশ বুধবার ফোনে তলব করে। মামলার বিষয় উল্লেখ করতেই তিনি ফোনকল কেটে দেন। তারপর থেকে তিনি আর ওই ফোন ধরেন নি। তাকে পাঠানো টেক্সট ম্যাসেজ ও হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠানো হলেও কোনো উত্তর দেন নি।

দুই পরিবারের ওই দু’জন ও একটি পরিবারের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন অপরাধ শাখা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার মুরলিধার শর্মা।

বুধবার কর্মকর্তারা বলেছেন, বিস্তৃত তদন্তে দেখা গেছে, এরা বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তকে রেকর্ড করতেন। তাদের ল্যাপটপে নারীদের ভিডিওরই বেশ কিছু ফোল্ডার আছে। অনীশ লোহারুকার ল্যাপটপের একটি ফাইল পাঠানো হয় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য। তাতে পাওয়া যায় ১৮২ টি ফোল্ডার। তার প্রতিটিতে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও। এসব ভিডিও ধারণ করা হয়েছে ২০১৩ সালে।

 

 

 

 

গত বছর তারা কৈলাস যাদবের সঙ্গে হাত মেলায়। কৈলাস যাদব হলেন অনীশের বাসার রাঁধুনি। তিনিই নারীদের যোগাড় করতেন এবং হুমকি দিয়েছেন ভিডিও প্রকাশ করে দেয়ার।

বলেছেন, যদি অর্থ না দাও তাহলে এসব ভিডিও প্রকাশ করে দেয়া হবে। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আদিত্য আগরওয়াল ও অনীশ লোহারুকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

তারা বলেছেন, যুবতীদের সঙ্গে তারা বন্ধুত্ব করতেন। বিভিন্ন স্থানে তাদেরকে ডেকে নিতেন। ওই সব স্থানে আগে থেকেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হতো ক্যামেরা। এসব ভিডিওর জন্য তারা একটি ডাটা ব্যাংক গড়ে তোলে।

তারপর প্রায় এক বছর আগে থেকে ওইসব যুবতীর কাছ থেকে অর্থ দাবি করতে থাকে। একটি ঘটনায় কৈলাস যাদবকে তারা রাজি করায় একজন যুবতীকে ফোন করতে।

বলা হয়, তার কাছে ৫ লাখ রুপি চাঁদা দাবি করতে হবে। এমন দাবির পর সমাজে মানসম্মান বাঁচাতে ওই যুবতী তাদেরকে ৫ লাখ রুপি পরিশোধ করেন। নগদ অর্থ পেয়ে তাদের মধ্যে চাহিদা আরো বেড়ে যায়। এবার তারা ওই যুবতীর কাছে আরও ১০ লাখ রুপি দাবি করে বসেন। ফলে ওই যুবতী বাধ্য হয়ে সাইবার অপরাধ বিষয়ক সেলের আশ্রয় নেন। তদন্তে জড়িত একজন কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন।

এ ঘটনাটি গত নভেম্বরের। পুলিশ বলেছে, অর্থ দাবি করা কৈলাস যাদব ও অভিযোগকারী যুবতীর মধ্যে গত তিন মাস ধরে চলা বেশ কিছু ফোনকল সনাক্ত করে এবং হোয়াটঅ্যাপের ম্যাসেজ যাচাই করে।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এর প্রেক্ষিতে ওই কৈলাস যাদবকে আমরা গ্রেপ্তার করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ও তদন্তে আরো বিষয় উন্মোচিত হয়ে পড়ে। এরপর আমরা অন্য দু’প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করি।

Development by: webnewsdesign.com