সিলেট নগরীর লালবাজারে কোম্পানীগঞ্জের পল্লী চিকিৎসক রেজাউল করিম হায়াত (৫০)-এর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ওই এলাকার হোটেল এমদাদীয়ার ম্যানেজার প্রাণেশ সরকার মিলন (৪৮) ও নাইট নাইটগার্ড ফয়ছল আহমদকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। আটক প্রাণেশ সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার নেওয়াগাঁয়ের রাকেশ বৈদ্য এর পুত্র ও ফয়ছল সিলেট ওসমানীনগরের কলাবাজার এলাকার আব্দুল সাদিকের পুত্র।
নিহত হায়াত হোটেল এমদাদীয়াই রাত্রি যাপন করেছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বোন মীনা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩। তাদের দুইজনকে ওই মামলায় সন্দেহজনক আসামী হিসেবে আটক দেখিয়ে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারী) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবু ফরহাদ। তিনি জানান, এর আগে মঙ্গলবার ম্যানেজার প্রাণেশ সরকার মিলন ও নাইট নাইটগার্ড ফয়ছল আহমদকে আটক করে পুলিশ। আজ পুলিশ আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে।
তিনি আরো জানান, নিহতের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাটিকে পুলিশ হত্যাকান্ড হিসেবেই দেখছে। এ ঘটনায় লালবাজারের হোটেল মোহাম্মদীয়ার ম্যানেজারসহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি। মঙ্গলবার ময়না তদন্তশেষে নিহতের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান ওসি।
পুলিশ জানায়, ঘটনার রাতে এমদাদীয়া হোটেলে রাত যাপন করেন হায়াত। লাশটি মোহাম্মদীয়া হোটেলের পেছনে পেলেও পুলিশ ধারণা করছে এই হত্যাকান্ডের সাথে হোটেল এমদাদীয়ার স্টাফ জড়িত। এজন্য ওই হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ। ছেড়ে দেয়া হয়েছে হোটেল মোহাম্মদীয়া আবাসিকের ম্যানেজারসহ ৪ জনকে।
অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, হায়াত ছিলেন স্ত্রীর দায়ের করা মামলার আসামী। মামলা থেকে বাঁচতে সিলেটে অবস্থান করছিলেন তিনি। পুলিশের দাবি হায়াত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশের একাধিক ইউনিট।
সিলেট আসার কথা বলে গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হন হায়াত। সেই যে বাড়ি থেকে এসেছিলেন আর বাড়ি ফিরে যাননি তিনি। গত সোমবার সকালের দিকে লালবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হোটেল মোহাম্মদীয়া আবাসিকের পেছনে রেজাউল করিম হায়াতের লাশ দেখতে পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
নিহত হায়াতের শরীরের মধ্যে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। পুলিশের সুরতহাল রির্পোট অনুযায়ী মরদেহের চোখে, কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার নাক মুখ সহ শরীর রক্তাক্ত ছিলো। এরপর পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশটি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠায়। ধারণা করা হচ্ছে, গত শনিবার ও রবিবার এই দুই দিনের ভিতরে কোনো এক সময় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মিডিয়া/এসআরসি-০৩
Development by: webnewsdesign.com