হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদী শুকিয়ে গেছে পানি সংকটে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত

সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ | ১১:২০ পূর্বাহ্ণ

হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদী শুকিয়ে গেছে পানি সংকটে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত
apps

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে কুশিয়ারা নদী শুকিয়ে গেছে পানি সংকটের কারনে চরমভাবে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে হাওরে বোরো ধানের ভরা মৌসুম। মূলত আমাদের দেশে এখন বোরো, আমন ও আউশের চাষাবাদের ওপর মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়। বিশেষ করে সেচভিত্তিক বোরো চাষাবাদই মুখ্য। মূলত দেশের মোট খাদ্য চাহিদার সিংহভাগ জোগান আসে বোরোর বদৌলতে। বোরোর চাষাবাদ পুরোটাই সেচ নির্ভর। আর এই সেচনির্ভর বোরো চাষাবাদে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। যদিও এখন ভূগর্ভস্থ পানির ওপরই সেচভিত্তিক চাষাবাদ অনেকাংশেই নির্ভরশীল। তবু নদীর পানি ও বৃষ্টির পানির যথেষ্ট অবদান রয়েছে। এক কালের খরস্রোতা নদী কুশিয়ারা এখন দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ বলেই মনে হয়। পানির অভাবে নদীটি শুকিয়ে গেছে। ফলে চলতি ইরি বোরো মৌসুমে উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের চাষিরা পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না জমিতে।

কয়েক হাজার একর জমিতে সেচ সঙ্কট দেখা দিয়েছে সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা কুশিয়ারা নদীর গতিপথটি শুকিয়ে গেছে। দীর্ঘ দিন যাবত নদীটি খনন না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও। নদীতে পানি না থাকায় সংকটে পড়েছেন চাষিরা। চলতি ইরি মৌসুমে পানির অভাবে কাগাপাশা ইউনিয়নের এবং কুশিয়ারা, বুরাজুর এবং সুটকি নদীর দুই পাড়ের কৃষকেরা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। অথচ এই এলাকাটি বছরের ছয় মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে। একমাত্র ইরি ধান আবাদ করে চাষিরা সারা বছরের জীবিকা নির্বাহ করেন। দারিদ্র সীমার নিচে বাস করা হাওর এলাকার কৃষকরা ব্যাংক কিংবা মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ও ধারদেনা করে বছরের একমাত্র ফসলের আবাদ করেন।

এবার সেচের পানির অভাবে সম্ভাব্য ফসলহানির আশঙ্কা মাথায় রেখে পরিবারের ভরণ-পোষণ ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। কৃষকরা জানান, কিছুদিন আগে রোপণ করা ধানের চারাগুলো বেড়ে উঠছে। এখন জমিতে সেচ দেওয়া দরকার। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় কয়েক দিন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে বিএডিসি কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন সেচ পাম্পগুলো। এ ব্যাপারে ধনপুর গ্রামের প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ ইজাজুল ইসলাম তালুকদার জানান, এবার নদীতে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চাষিদের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেছে। এদিকে নদীতে যেমন পানি নেই। তেমন চলছে অনাবৃষ্টিজনিত টানা খরা। এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নেমে গেছে।

এলাকার গভীর নলকূপেও সহজে পানি উঠছে না পানির অভাবে হাওরে চাহিদা মাফিক পানি সেচ দিতে পারছি না। তবে এই নদিটি খনন না করলে দিন দিন আমাদের কৃষি কাজ বোরো জমিতে সেচ দেওয়া কঠিন হয়ে পরবে। এ ব্যাপারে কাগাপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন ধরে খনন না করায় এ এলাকার কুশিয়ারা শুকিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার শুধু এলাকার কৃষকেরাই নয়, কয়েক হাজার জেলে পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় তাদের মাছ ধরা বন্ধ হয়ে গেছে। নদী গুলো দ্রুত খননের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

Development by: webnewsdesign.com