সেই রেজিনা কোথায় জানেনা স্বজনরা

শনিবার, ২৬ মার্চ ২০২২ | ৬:০৫ অপরাহ্ণ

সেই রেজিনা কোথায় জানেনা স্বজনরা
apps

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ১নং আলীনগর ইউনিয়নের নসিরখালী গ্রামের কৃষক মঈনুল হক ও গৃহীনি করপুল বেগমের ৩য় সন্তান রেজিনা। মেয়ে বড় হওয়ার পর মা-বাবা অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা গোলাপগঞ্জের আমনিয়া গ্রামের মরহুম জহুর আলী চৌধুরীর ছেলে আব্দুল মালিক চৌধুরীর সাথে প্রায় ২০ বছর পূর্বে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর রেজিনার সংসার ভালোই চলছিল। তারপর একে একে জন্ম নেয় ২০০৩ সালে রাহাত জেরিন চৌধুরী, ২০০৬ সালে রাহাত জেদিন চৌধুরী এবং ২০১২ সালে জন্ম নেয় রাহাত সেবিন চৌধুরী নামের ৩টি মেয়ে সন্তান। বিশেষ করে ২০১২ সালে ছোট মেয়ে রাহাত সেবিন জন্মের পর থেকেই স্বামীর সাথে রেজিনার বনবিনা হচ্ছিলনা, সৃষ্টি হয় দূরত্ব। দূরত্ব থেকে এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের শুরু থেকেই রেজিনার ভরণপোষন বন্ধ করে দেন স্বামী আব্দুল মালিক চৌধুরী, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আব্দুল মালিক চৌধুরীর অন্য ভাইয়েরা রেজিনা বেগমকে তিন সন্তানসহ জোর পূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয়। কোন উপায় না পেয়ে তিন সন্তানসহ রেজিনা আশ্রয় নেন পিত্রালয়ে। শুরু হয় আলাদা জীবন যাপন। বাবার অভাবী সংসারে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে নাবিশ্বাস ওঠে রেজিনার, চেষ্টা করেন চাকুরীর। অনেক চেষ্টার পর অবশেষে ২০১৩ সালের শেষের দিকে একটি এনজিও সংস্থায় হেলথ্ প্রোগ্রামে ১৫,০০০/ টাকা মাসিক বেতনে চাকুরী হয়। কিছুদিন বাবার অভাব অনটনের সংসারে থাকার পর ৩ মেয়ে সন্তান নিয়ে অসহায় রেজিনা একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। চাকুরী পেয়ে ৩ সন্তান নিয়ে জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকার নতুন স্বপ্ন দেখলেও একশ্রেনীর কুচক্রী সমাজপতি রেজিনার নেতিবাচক সমালোচনা শুরু করে।এদিকে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী রেজিনার এনজিওতে চাকুরী করাটাকে পছন্দ করেনি, তাই তারা স্থানীয় সমাজে, প্রতিবেশী, এবং রেজিনার আত্নীয় স্বজনদের কাছে তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করে বাদ বানানোর চেষ্টায় লিপ্ত হয়। নেতিবাচক সমালোচনায় প্রতিবেশী ও আত্নীয় স্বজনরা রেজিনাকে ভুল বোঝতে শুরু করে এবং তাহার সাথে চলা ফেরায় দূরত্ব তৈরি করে, ফলে সে সমাজে একা হয়ে যায়। এই অবস্থায় রেজিনা প্রতিবেশী,আত্নীয়স্বজনের সমালোচনা কর্ণপাত না করে ৩ সন্তানের ভবিষ্যৎ ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে তাহার নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে চাকুরী অব্যাহত রাখেন। কিন্তু একটি ধর্মীয় গোষ্টি যখন দেখে কোন ভাবেই রেজিনার কার্যক্রম থেকে বিরত করা যাচ্ছেনা, তখন তারা পরকিল্পনা করে তাকে কিভাবে শেষ করা যায়। তারা বিভিন্ন ভাবে তাকে হুমকি দিতে থাকে। তাদের হুমকিতে ৩ সন্তানসহ জীবন বাচাঁতে রেজিনা এখন নিরোদ্দেশ। সে কোথায় আছে জানেনা তার স্বজনরা।

Development by: webnewsdesign.com