সুনামগঞ্জে আ’লীগ নেত্রী ও কলেজ অধ্যক্ষের অনৈতিক ভিডিও ভাইরাল

বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২০ | ৪:৩৫ অপরাহ্ণ

সুনামগঞ্জে আ’লীগ নেত্রী ও কলেজ অধ্যক্ষের অনৈতিক ভিডিও ভাইরাল
apps

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীর সাথে বিবিয়ানা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র চন্দ্র তালুকদারের ৮ মিনিট ৪ সেকেন্ডের অসামাজিক ভিডিও সামজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে বিবিয়ানা কলেজ এলাকার বাসিন্দাদের একাধিক ফেসবুক আইডি থেকে অধ্যক্ষের নানা অপকর্মের ফিরিস্তিসহ ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এনিয়ে দেশ-বিদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরাসহ উপজেলার সর্বত্র তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠে। সন্ধ্যা নাগাদ সচেতন মহলে নানা গুঞ্জনসহ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবী তুলেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রাজরানী চক্রবর্তীর সাথে ৭/৮ বছর পুর্বে অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র চন্দ্র তালুকদার এর পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইউপি সদস্য থাকাকালীনই অধ্যক্ষের প্ররোচনায় স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয় রাজধানী চক্রবর্তীর। একপর্যায়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে সিলেট শহরে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে বাসা ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করেন নৃপেন্দ্র তালুকদার। তবে এই অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি সহজে মেনে নিতে পারেননি রাজরানীর স্বামী দুই সন্তানের জনক মধূসুদন চক্রবর্তী। স্বামী স্ত্রী দুজনেই মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েন।

 

 

 

 

 

গত বছর স্ত্রী রাজরানী চক্রবর্তী কর্তৃক দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন তার স্বামী। এনিয়ে এলাকায় বিভিন্ন সময়একাধিক সালিশ বৈঠক হয়। বিষয়টি নিয়ে রাজরানীর স্বামী স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে বিচারপ্রার্থীও হন।

কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে রাজরানীর সখ্যতা থাকায় সুবিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন স্বামী মধুসুদন চক্রবর্তী। এই পরকীয়ার সম্পর্কটি বারবারই ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়।

বিধিবাম বিগত জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. জয়া সেনগুপ্তার কুলঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে গেলে সিলেট থেকে এসে যোগ দেন রাজরানী চক্রবর্তী।
ধীতপুর বোয়ালিয়া বাজার এলাকায় দিনভর প্রচারণা শেষে পরকীয়া প্রেমিক ভাইটগাঁও গ্রামে নৃপেন্দ্র দাসের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে অনশন করেন রাজরানী। ওই দিন রাতভর সেখানে অবস্থানের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে নানা শর্তসাপেক্ষে তাকে সেখান থেকে বিদায় করা হয়। এরপর থেকে শর্তমতে অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র দাস সিলেটে রাজরানীর যাবতীয় ভরণপোষন করে আসছেন। অপরদিকে এবিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিন সন্তানের জননী নৃপেন্দ্র তালুকদারের স্ত্রী।

তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বারবার প্রস্তাব দেন। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টার পর রাজরানী চক্রবর্তীর ফেসবুক আইডি থেকে ‘কারো মৌলিক অধিকাওে হাত দিয়ে কথা বলা ঠিক না’ লিখে পোস্ট করেন। এরপর থেকে সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি থেকে অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র চন্দ্র তালুকদার ও রাজরানী চক্রবর্তীর আপত্তিকর ভিডিওটি ভাইরাল হতে থাকে। বিবিয়ানা মডেল কলেজের জিবি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিলন মিয়া বলেন, দুজনের পরকীয়ার সম্পর্কের বিষয়টি অধ্যক্ষের পরিবারসহ এলাকার সবার জানা আছে।

 

 

 

 

 

গত সংসদ নির্বাচনের সময় রাজরানী চক্রবর্তী বিয়ের দাবীতে নৃপেন্দ্র তালুকদারের বাড়িতে অনশন করেছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়ার মধ্যস্থতায় তাকে বাড়ি থেকে বিদায় করা হয়। অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র তালুকদারের বড় ভাই বিবিয়ানা মডেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পবিত্র মোহন দাস তালুকদার বলেন, রাজরানী চক্রবর্তী একজন বেশ্যা নারী, তার সাথে আমাদের কোনো আপোষ নেই। রাজরানী চক্রবর্তীর স্বামী মধু সূধন চক্রবর্তী জানান, সে আমাকে ছেড়ে অনেক আগেই চলে গেছে। অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র তালুকদারের প্ররোচনায় সে আমাকে একাধিকবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। আমি ঠাকুর মানুষ এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাইনা। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে দু জনের অসামাজিক ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে অধ্যক্ষ নৃপেন্দ্র চন্দ্র তালুকদারের মোবাইল ফোনটি (০১৯১৮-…৩০১) বন্ধ রয়েছে। রাজরানী চক্রবর্তী মোবাইলে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিবিয়ানা মডেল কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফি উল্লাহর অফিসিয়াল মোবাইলে বারবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Development by: webnewsdesign.com