সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মোছা. সায়মা হোসেনের মৃত্যরহস্য উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আজ প্রকাশের কথা থাকলেও তা হয়নি। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রশাসন ভবনের সামনে টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাদের।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সায়মার মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি কোনো গাফিলতির কারণে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন নিশ্চুপ। জুলাই আন্দোলনের ফলে যারা প্রশাসনের চেয়ারে বসেছে তারা কি আদৌও শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো প্রশাসন? যতক্ষণ পর্যন্ত সুষ্ঠু কোনো রিপোর্ট প্রকাশ না করা হবে ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তারা এই জায়গায় কেন গাফিলতি করলো? আরেকটা বিষয় হলো- তারা যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদন দেবে, সেহেতু যেন সঠিক প্রতিবেদন দেয়। এখানে যেন কোনো খামখেয়ালি না থাকে। এমনটা যেন না হয় যে, যারা এরসঙ্গে জড়িত, তাদের প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই, যারা সায়মার মৃত্যুর সময় উপস্থিত ছিল এবং দায়িত্বে অবহেলা করে সায়মাকে রেসকিউ করতে পারেনি, তাদের যেন চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও সায়মার পরিবারকে যেন এককালীন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং তার ভাইকে যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, রাকসু প্রতিনিধিদের অবস্থান এই বিষয়ে সম্পূর্ণ স্পষ্ট। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, তদন্ত কমিটি এবং প্রশাসনের সঙ্গে আমরা রাকসু প্রতিনিধিরা একসঙ্গে সিনেটে বসবো। তারা আমাদের কাছে কিছু সময় চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সিনেটে তদন্ত রিপোর্ট সবার সামনে প্রকাশ করা হবে। আমরা তাদেরকে সে পর্যন্ত সময় দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, রাকসুর প্রতিনিধিরা এখনো পর্যন্ত ভবনে বসেননি এবং প্রথম অধিবেশনও শুরু হয়নি। তবে অধিবেশন শুরু হলেই রাকসুর প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুই মিনিটও সময় নেবেন না।
প্রসঙ্গত, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত সায়মা হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নামলে তিনি পানিতে ডুবে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সায়মার মৃত্যুর তদন্ত করতে ৭২ ঘণ্টার সময় দিয়েছিল তারা।
Development by: webnewsdesign.com