আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংগঠটির সাবেক নেতারা।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল হুদা ও রজিবুল আহাসান সুমন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু, ইউনুস গনি চৌধুরী, হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, মোহম্মদ আবু তৈয়ব।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর ডেটলাইন সীতাকুণ্ড : নিলামে উঠলো ছাত্রলীগের পদ। শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, ছাত্রলীগের পদ দেয়ার জন্য একপক্ষের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিলেও পরে ২০ লাখ টাকা পেয়ে অন্যদের পদে বসিয়ে দেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
এ সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ নিয়ে আজ গণমাধ্যমে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি সংবাদ আমাদের নজরে এসেছে। এছাড়া সীতাকুণ্ডের আগের কমিটি বহাল রাখার জন্য জেলা ছাত্রলীগের ৮ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ ও পরে এর মধ্য থেকে ৭ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়ার বেশ কিছু কল রেকর্ডও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া একটি আদর্শিক সংগঠন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনে মেধা ও মননের সমন্বিত চর্চার যে ধারাবাহিকতা সেটি রক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল নেতাদের এই মানসিকতা অনেক বড় ধরনের বাধা বলে আমরা মনে করি৷ ছাত্রলীগের ইউনিটগুলোর মধ্যে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে আমরা যারা এই সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের কাছে ছাত্রলীগ এখনো প্রচণ্ড এক আবেগের নাম।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়সহ স্বাধীন দেশে জনক হত্যার পর স্বৈরাচার হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় জামায়াত-শিবিরের ভয়াবহ সন্ত্রাস মোকাবেলা করতে গিয়ে এই ইউনিটের শত শত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর রক্ত ঝড়েছে। অসংখ্য আদর্শিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর রক্তস্নাত পূন্যভূমিতে আজকের যে কুসুমাস্তীর্ণ পরিবেশ সেটিকে কাজে লাগিয়ে আদর্শিক রাজনীতির ভীতকে আরও শক্তিশালী করার কথা। অথচ তার বদলে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে যদি এভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয় তাহলে এটি অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে প্রাণ দেয়া শহীদ নেতাকর্মীদের স্মৃতির প্রতি চরম অসম্মানজনক আচরণ বলেই আমরা মনে করি। বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা।
সংগঠনের সাবেক নেতা হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগের তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি ও চারজন সাধারণ সম্পাদক।
Development by: webnewsdesign.com