ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মোল্লা’র নাতী সরাইল সরকারি ডিগ্রী কলেজের মেধাবী ছাত্র ফয়সাল হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে ) বেলা ১১টার দিকে এলাকাবাসী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, সরাইল সরকারি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে ফেষ্টুনসহ কুট্টাপাড়া এবং কালীকচ্ছ ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামের শতাধিক লোকের অংশগ্রহণে উপজেলা সদরে উচালিয়াপাড়া মোড় থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলে মামলার দুই আসামি চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন ও ব্যবসায়ী জীহাদের ফাঁসির দাবীতে স্লোগান দেয়া হয়। পরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চল্লিশ মিনিট অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি থেকে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে নিহত ফয়সালের বাবা রাকিব মিয়া বলেন, কালীকচ্ছ বাজারের দাঙ্গায় ধর্মতীর্ণ গ্রামের সন্ত্রাসীদের শর্টগানের গুলিতে আমার ২০ বছরের ছেলে ফসয়াল মিয়া নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। আমার ছেলে নিহত ফয়সাল মিয়া সরাইল সরকারী কলেজের ছাত্র ছিল এবং কালীকচ্ছে থেকে তার মামাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করত। ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে ঝড়ে গেছে একটি নিষ্পাপ প্রাণ। বাবা হিসাবে এই কষ্ট সহ্য করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। ফয়সালের নৃসংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় ধর্মতীর্থ গ্রামের চিহ্নিত দাঙ্গাবাজ ৩০ জন সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।আমার ছেলে হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর দুটি মামলার আসামিরা অদৃশ্য শক্তির সহায়তায় কালীকচ্ছ বাজারে প্রকাশ্যে অবস্থান করছে। তাই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফয়সালের বাবার দাবী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আসামীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। গ্রেপ্তার কাজে কোন পুলিশ সদস্যের অবহেলা থাকলে তার বিরূদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে কালীকচ্ছের বিটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। উক্ত দাবীগুলি পূরণ নাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি গহণ করতে বাধ্য হবো।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফয়সাল হত্যা মামলার ৩ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন জামিনে এসেছেন। বাকি দুইজন জেলহাজতে আছে। সন্ধিগ্ধ অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ, ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে দুই গ্রামবাসীর সংর্ঘষে ফয়সাল আহাম্মেদ নামে এক যুবক নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
Development by: webnewsdesign.com