লা লিগার শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ লাস পালমাসকে উড়িয়ে

সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

লা লিগার শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ লাস পালমাসকে উড়িয়ে
apps

ম্যাচের ৩০ সেকেন্ড না যেতেই গোল হজম, একটু পর ব্রাহিম দিয়াসের অবিশ্বাস্য মিস- ভীষণ নড়বড়ে শুরুর পর কী দারুণভাবেই না ঘুরে দাঁড়াল রিয়াল মাদ্রিদ। চমৎকার পারফরম্যান্সে জোড়া গোলের আলো ছড়ালেন কিলিয়ান এমবাপে। জালের দেখা পেলেন তার দুই সতীর্থও। লাস পালমাসকে উড়িয়ে লা লিগার শীর্ষে উঠল কার্লো আনচেলত্তির দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ৪-১ গোলে জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটা সময় একজন কম নিয়ে খেলেছে পালমাস। এই সময়ে কোনো গোল যদিও হয়নি। ব্যবধান আরও বড় হতেই পারত। রিয়াল আরও তিনবার জালে বল পাঠালেও বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। এছাড়া ম্যাচে ৯টি সেভ করেন সফরকারী গোলরক্ষক ইয়াসপের সিলেসেন। গোটা ম্যাচে গোলের জন্য ২৬টি শট নিয়ে ১৩টি লক্ষ্যে রাখে রিয়াল। সেখানে পালমাসের কেবল ৬ শটের ২টি লক্ষ্যে ছিল।

ফাবিও সিলভা পালমাসকে এগিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করেন এমবাপে। তার দুই গোলের মাঝে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাহিম দিয়াস। দ্বিতীয়ার্ধে জালের দেখা পান রদ্রিগো। সৌদি আরবে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৫-২ গোলে হারের পর টানা দুই ম্যাচে বড় জয় পেল রিয়াল। ঘরের মাঠেই গত বৃহস্পতিবার কোপা দেল রের শেষ ষোলোয় অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে রিয়াল বেতিসকে ৫-২ গোলে হারায় তারা। ২০ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৪ ড্রয়ে লিগ টেবিলে রিয়ালের পয়েন্ট হলো ৪৬। সমান ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমে গেছে আগের দিন হেরে যাওয়া আতলেতিকো। ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বার্সেলোনা।

কিক-অফের পর প্রথম শাণানো আক্রমণেই রেয়ালকে স্তব্ধ করে দেয় পালমাস। ডান দিক থেকে সান্দ্রো রামিরেসের পাসে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে ছয় গজ বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠান ফাবিও সিলভা। ঘড়ির কাঁটায় ম্যাচের বয়স তখন ২৮ সেকেন্ড! ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে লা লিগায় রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে ম্যাচের পর যেকোনো প্রতিযোগিতায় রিয়ালের দ্রুততম গোল হজমের ঘটনা এটি। ওই ম্যাচে ১৫ সেকেন্ডে গোল খেয়েছিল তারা।

তৃতীয় মিনিটে দলকে সমতায় ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ পান ভিনিসিউস জুনিয়রের নিষেধাজ্ঞায় একাদশে সুযোগ পাওয়া ব্রাহিম। কিন্তু বাঁ দিক থেকে রদ্রিগোর পাস ছয় গজ বক্সে ফাঁকায় পেয়ে অবিশ্বাস্যভাবে বাইরে মারেন তিনি। ধারাভাষ্যকাররাও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। পঞ্চম মিনিটে আরেকটি গোল হজম করতে পারত রিয়াল, আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে কোনাকুনি শট উড়িয়ে মারেন সিলভা। অষ্টাদশ মিনিটে ঠাণ্ডা মাথার সফল স্পট-কিকে সমতা ফেরান এমবাপে। বক্সে রদ্রিগো ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। এই মৌসুমে লা লিগায় পেনাল্টি থেকে চারটি গোল করলেন এমবাপে, যা ওসাসুনার আন্তে বুদিমিরের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

২৬ থেকে ৩০, চার মিনিটের মধ্যে রিয়ালের তিনটি প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন সিলেসেন। ৩৩তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এমবাপের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি, লুকাস ভাসকেসের পাসে স্লাইডে ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ব্রাহিম। তিন মিনিট পর ব্যবধান বাড়িয়ে দলকে চালকের আসনে বসান এমবাপে। আলগা বল পেয়ে আক্রমণে ওঠে রিয়াল। রদ্রিগো পাস দেন বক্সে, আর প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে ম্যাচের নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। ৪২তম মিনিটে রদ্রিগোর কাটব্যাকে ছয় গজ বক্সের সামনে থেকে আবার জালে বল পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের আনন্দে মেতে ওঠেন এমবাপে। তবে ভিএআরে উবে যায় তার সেই আনন্দ। আক্রমণের শুরুতে অফসাইডে ছিলেন তিনি। বিরতির আগে এমবাপের আরেকটি শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

৫৭তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন রদ্রিগো। বক্সে ফ্রান গার্সিয়ার পাসে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ৬৪তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় পালমাস। ভাসকেসকে বাজেভাবে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার বেনিতো রামিরেস। ৭৩তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যাম জালে বল পাঠালেও ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। বিল্ডআপের সময় অফসাইডে ছিলেন আন্টোনিও রুডিগার। তিন মিনিট পর রুডিগারের বদলি নামেন ডাভিড আলাবা। হাঁটুর চোট কাটিয়ে ১৩ মাস পর মাঠে ফিরলেন অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার। ৮৬তম মিনিটে চমৎকার শটে বল জালে পাঠান ফেদেরিকো ভালভের্দে, কিন্তু এবারও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি। শেষ দিকে বেলিংহ্যামের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। ২০ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ১৪ নম্বরে আছে পালমাস।

Development by: webnewsdesign.com