সারাদেশে করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন চলছে। আর এই লকডাউনে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের রিক্সা ও চালকরা। সড়কে যাত্রী পাচ্ছে না। সারদিন যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে তারা।
সোমবার (১৯ এপ্রিল)রমজান ও কঠোর লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর এলাকার মহিলা কলেজ মোড়, রাজধানী মোড়, চুড়িপট্টি মোড়, শান্তি মোড়, বাসস্ট্যান্ড, চারমাথা মোড়, হাঁসপাতাল মোড়, ও সিপি মোড় সহ বাজার ঘুরে দেখা গেছে লকডাউনের কারণে খালি রিক্সা,ও ভ্যান নিয়ে বসে আছেন অনেকেই। কেউ মাথায় হাত, কেউ কপালে হাত, কেউ চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে, আবার অনেকেই হেন্ডেল ধরে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।
চলার পথে কথা হয় মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা এক রিক্সা চালক রাশেদ মিয়ার সাথে। রাশেদ মিয়া বলেন, খুব চিন্তা ও মনে খুব কষ্ট নিয়ে বসে আছি ভাই। একে তো রমজান মাস তারপর আবার লকডাউন সারাদিন রিক্সা চালিয়ে কামাই হচে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মতো। বাড়িতে আমরা স্বামী স্ত্রীসহ সাত জন সদস্য। এই অল্প কামাইে কি ভাবে সংসার চালাবো ভেবে পাচ্ছি না। শুধু আমি নয় ভাই, আমারা চালকরা সবাই খুব কষ্টে আছি। সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন রাস্তা, মোড় ও বাজারে ঘুড়তে থাকি। একবার যাত্রী উঠলে আবার আধা ঘণ্টা এক ঘন্টা পর যাত্রী মিলে। কামাই না হলে খাবো কী।’
কথা হয় আর একজন ভ্যান চালক নিরমল রবিদাসের সাথে। নিরমল বলেন, ভাই পেটে তো আর লকডাউন মানে না। তাই বাড়িতে বসে থাকে কি করব? করোনার ভয় ঢর না করে রাস্তায় ভ্যান চালাচ্ছি আল্লাহ যা করে! সংসারের অভাব দেখে ভালো লাগে না।
রিক্সা চালক এমদাদ বলেন, গরিব মানুষ কি করব? সংসারে ছেলে মেয়ে নিয়ে খুব বিপাকে পড়েছি ভাই। যারা ধনী মানুষ তাদের কোনো অভাবও নাই, চিন্তাও নাই। যত অভাব আর চিন্তা সব আমাদের। নুন আনতে পান্তা ফুরায় আমাদের সংসারে। এখন রমজান মাস আর লকডাউনে যাত্রীর যে অবস্থা, সারাদিনে যা কামাই তা দিয়ে দেড় থেকে দুই কেজি চাল হবে হয়তো। সংসারের আর চাহিদা কি দিয়ে মিটাবো? আমরা সরকারের কোন অনুদানও পাচ্ছি না।
রিক্সা ভ্যান চালকদের সরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ আছে কি না চাইলে, হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, এখন পর্যন্ত আমার উপজেলায় করোনা কালিন সময়ের সরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী আসেনি। তবে ত্রাণ সামগ্রী আসলে তাদের অবশ্যই দেওয়া হবে।
দৈনিক বাংলাদেশ মিডিয়া/এসআরসি-১৯
Development by: webnewsdesign.com