রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি কতদূর..?

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১২:০৩ অপরাহ্ণ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি কতদূর..?
apps

রোহিঙ্গা সংকট এখনও এ অঞ্চলের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে রয়ে গেছে। মিয়ানমারের গাফিলতিতে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম তেমনভাবে অগ্রসর হতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড. মার্ক টি এসপার শুক্রবার ফোন করেছেন। এসময় রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে তার দেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের উদারতা প্রদর্শনের প্রশংসা করেন এবং এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র আবারও বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করায় তাদের ধন্যবাদ জানাই। তবে এ যেন কথার কথা না হয়। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র এই মানবিক সংকট মোকাবেলায় অতীতের চেয়েও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। যুক্তরাষ্ট্র অতীতেও যেমন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, প্রত্যাবাসনেও আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।

গত শনিবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ২ জন নারী সদস্যসহ ৪০ জনের প্রতিনিধি দল নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছার পর থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর, মসজিদ, সাইক্লোন সেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেছেন। সেখানকার সবকিছুই তাদের কাছে ভালো লেগেছে। রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য ভাসানচরে সরকার যে ব্যবস্থা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে রোহিঙ্গারা সেখানে অনেক আরাম আয়েশে থাকতে পারবে। সেখানে না যাওয়ার আগে ভাসানচর সম্পর্কে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু সব কিছু নিজের চোখে দেখে এখন ভুল ভেঙে গেছে। তারা নিজেদের চোখে দেখে আসা ভাসানচরের বর্ণনা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের শোনাবেন।

কিন্তু ক্যাম্পে ফিরে আসার পর তাদের সুর পাল্টে গেছে। প্রতিনিধি দলের কেউ কেউ সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও তাদের মধ্যে ভিন্নমতও আছে৷ নানামুখী মতের পাশাপাশি চাপ আছে বলেও তারা জানিয়েছেন। এছাড়া তারা বলছেন: ‘ঘরের আকার ছোট। ওই ঘরে দুই-তিন জনের বেশি থাকা সম্ভব নয়৷ রোাহঙ্গাদের প্রত্যেক পরিবারে গড়ে সাত-আট জন করে সদস্য রয়েছে।’ ভাসানচরে আশ্রয়ন প্রকল্পে রোহিঙ্গাদের থাকতে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। সরকারের এমন নমনীয় এবং আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।

আমরা মনে করি, ভাসানচরে স্থানান্তরের বদলে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসন করতে হবে। এজন্য সরকারের কূটনৈতিক জোরালো প্রচেষ্টা জরুরি। এর বদলে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হলে রোহিঙ্গা সংকট আরও দীর্ঘমেয়াদী হবে। এমনটা কোনভাবেই কাম্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ মানবিক বোধসম্পন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

Development by: webnewsdesign.com