মানসিক প্রতিবন্ধী সেলিনা আক্তার। বয়স ৪০ ছুঁই-ছুঁই। নানা সময়ে সৎ ছেলে ও তার স্ত্রীকে ত্যক্ত-বিরক্ত করতেন। অনেক সময় হতো বাগবিতন্ডা। এক বছর নয়। দু’বছর নয়। এভাবে চলতে থাকে তিন বছর। এতে ক্রমেই ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে থাকেন সৎ ছেলে ও তার স্ত্রী। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মঙ্গলবার।
পেটে গর্ভধারণ না করলেও পাগলী মাকে এভাবে জবাই করে হত্যার ঘটনায় গোটা এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়নের লাভরাপাড়া এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। মঙ্গলবার রাতে সেলিনা আক্তারকে তার সৎ ছেলে জবাই করে হত্যা করে।
বুধবার সকালে রূপগঞ্জ থানায় পৌঁছে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ছেলে আমির হোসেন। নিহত সেলিনা আক্তার আড়াইহাজার উপজেলার লষ্করদি এলাকার তাহের আলীর মেয়ে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, লাভরাপাড়া এলাকার দিনমজুর নুরু মিয়া তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর গত তিন বছর আগে লষ্করদি এলাকার সেলিনা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর জানা যায় সেলিনা আক্তার মানসিক প্রতিবন্ধি ছিলো। নুরু মিয়া ও তার স্ত্রী থাকতেন এক কক্ষে। আরেক কক্ষে থাকতেন তার আগের সংসারের ছোট ছেলে আমির হোসেন ও তার স্ত্রী বিথী আক্তার।
ওসি পরিবারের বরাত দিয়ে আরো জানান, বাড়িতে রান্নাবান্নাসহ বিভিন্ন সাংসারিক বিষয় নিয়ে বউ-শ্বাশুড়ীর মধ্যে প্রায়শ ঝগড়া হতো। এতে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যেতো আমির হোসেন। গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার বিচার-সালিশও হয়েছে। সোমবার(১১ জানুয়ারি) বিকালে ছেলের ঘরের ভেতর তার সৎ মা প্রশ্রাব করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ছেলের বউ। এনিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হলে বিথী আক্তার বাপের বাড়ি চলে যান। মঙ্গলবার রাতে ঐ ঘটনা নিয়ে মা-ছেলের মধ্যে পুনরায় ঝগড়া হয়। এসময় মা ধারালো ছুরি নিয়ে ছেলের দিকে তেড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে তার মায়ের হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে সেখানেই সৎ মাকে জবাই করে হত্যা করে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় আমির হোসেন পলাতক ছিলো। তবে বুধবার সকালে সে রূপগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমপর্ণ করেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, আমির হোসেন থানায় এসে আত্মসমপর্ণ করেছেন। সে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Development by: webnewsdesign.com