রামেকে হবে সব পরীক্ষা খরচ কমল করোনা রোগীদের

সোমবার, ০২ আগস্ট ২০২১ | ৩:০৩ অপরাহ্ণ

রামেকে হবে সব পরীক্ষা খরচ কমল করোনা রোগীদের
apps

করোনায় আক্রান্ত সকল রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই করা শুরু হয়েছে। এ জন্য রোববার থেকে হাসপাতালে পৃথক চারটি প্যাথলজি সেবা চালু করা হয়।

এখন করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য সিটি স্ক্যান ও রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালেই হচ্ছে। এতে হাসপাতালে ভর্তি রোগিদের চিকিৎসা খবর কমে আসবে কয়েকগুন।

রোববার সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের নতুন প্যাথলজি বিভাগে এ কার্য্যক্রম শুরু হয়। রামেক হাসপাতাল কর্তপক্ষ জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতায় এসব পরীক্ষা আগে বাইরে থেকে করতে হতো।

এতে একজন রোগীর পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা ব্যয় হতো। আর ফলাফল পেতে সময় লাগতো দীর্ঘক্ষণ। বিশেষ করে গ্রাম থেকে আসা রোগীরা পড়তেন ব্যাপক ভোগান্তিতে।

হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেছেন, সিআরপি ডিডাইমার, সিরাপ ভ্যারিয়েন্ট, সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন রক্তের পরীক্ষা নিরীক্ষা হাসপাতালে ১৪০০ টাকার মধ্যেই করা যাবে। এতে টাকা যেমন বাঁচবে তেমনি দ্রুত ফলাফলও পাওয়া যাবে।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, সরকার নির্ধারিত ৬০০ টাকায় ডি-ডাইমার, ২৫০ টাকায় সিরাম ফেরিটিন এবং ১৫০ টাকায় ডি-হাইড্রোজেনেস ও সিআরপি পরীক্ষা করা যাবে। পাশাপাশি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) রোগীদের আরও তিনটি পরীক্ষা একসঙ্গে ৬০০ টাকায় করা হবে।

ইসিজির ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। এর সঙ্গে এখন ট্রপোনিন আইও টেস্ট করা যাবে ৫০০ টাকায়। হাসপাতালের বাইরে এই পরীক্ষাগুলো করাতে করোনা রোগীদের গুনতে হতো পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, করোনা রোগীদের এই পরীক্ষাগুলো একাধিকবার করতে হয়। ফলে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে এর আগে অনেক রোগী পরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য করোনা রোগীদের হাসপাতালের বাইরে যেতে হবে না। বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করতে রোগিদের অনেক টাকা খরচ করতে হয়। সেটি আর করতে হবে না। এ জন্য হাসপাতালে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার জন্য আউটডোর, ইনডোর, ওয়ান স্টপ সার্ভিস এবং কার্ডিয়াক প্যাথলজি নামে চারটি পৃথক প্যাথলজি সেবা চালু করা হবে।

হাসপাতাল কর্তপক্ষ জানাচ্ছে, রাজশাহীতে করোনার পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। শনাক্তের হার ভর্তি কমেছে। কয়েকদিন আগেও যেখানে ৭০ থেকে ৭৫ জন ভর্তি থাকতো এখন ভর্তি থাকছে ৫০ এর নিচে। সর্বচ্চ ৫২২ জন ভর্তি হয়েছে এখন ভর্তি ৪১৮ জন।

রাজশাহী থেকে এখন পাবনা ও সিরাজগঞ্জের সনাক্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। রাজশাহী থেকে ঢাকার দিকে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে করোনা। এখনো হাসপাতালে ভর্তিরত ৭০ শতাংশ করোনা রোগীই গ্রামের তাই উপজেলা ভিত্তিক ভাবে স্বাস্থ্যবিধিতে আরো কঠোর ভাবে নজরদারির নজর দিতে বলছেন কর্তপক্ষ।

জনস্বাস্থ্যবিদরা জানাচ্ছেন, রাজশাহীর বাইরে অনেক হাসপাতালে করোনা রোগীদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে বেড পাচ্ছে না। কিন্তু রাজশাহী মেডিকেল কলেজে কোন করোনা রোগীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা ঘনেটি। তাদের অনুসরণ করে অন্য হাসপাতাল গুলো ভালো ভাবে সেবা দিতে পারবে।

এ বিষেয় কথা হয় রামেক হাসপাতাল কর্তপক্ষের সাথে হাসপাতাল পরিচালক জানাচ্ছেন, প্রথম অবস্থায় হাসপাতালে অক্সিজেন যুক্ত করোনার বেড ছিলো ৬৫ টি। প্রথম অবস্থায় অক্সিজেনের চাহিদা কম ছিলো পরে বাড়তে থাকে। আমরা সে সময় দেখলাম সিডিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে সম্ভব হবে না।

নতুন বাবে অক্সিজেনের লাইন লাগানো শুরু করলাম। গত ইদুল ফিতরের সময় থেকে ঈদুল আজহা পর্যন্ত একটি টিম কাজ করেছে। অক্সিজেনের পাইপ দিয়ে লাইন লাগে প্রথমে যে পাইপ দেওয়া হয়েছিলো পরে অনেক জায়গায় হাইফ্লো দিলে স্লো হয়ে যায়।

আমরা মোটা লাইন দিয়ে আবার ভালো ভাবে তৈরি করি। এর পরে বেডের সাথে সাথে বাড়ানো হয়েছে অক্সিজেনের লাইন। সেই কাজ করায় রোগী আমাদের ফেরাতে যেতে হয়নি।

দীর্ঘ সময় হলেও অক্সিজেনের লাইন গুলো লাগাতে সক্ষম হয়েছি। যে ভাবে রোগী ভর্তি হয়েছে আমরাও সে ভাবে বেড বাড়িয়ে অক্সিজেন লাইন লাগিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের অক্সিজেনের যে পরিকল্পনা ছিলো ১০ হাজার বেডের যা স্পালাই দেয় আগে। আগে অক্সিজেন লাগতো দুই থেকে তিন হাজার এখন লাগছে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার।

Development by: webnewsdesign.com