চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। দিন যত এগিয়ে আসছে, ভোটের মাঠে উত্তেজনা ততোই বাড়ছে। মেয়র পদে ৩ জন শক্ত প্রার্থী থাকায় এখানে ত্রিমূখী লড়ায়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। বর্তমানে পৌরসভার গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় শীতকে উপো প্রার্থীরা প্রচারণায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নাওয়া- খাওয়া ভুলে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরছেন বাড়ি বাড়ি। এখানে মেয়রপদে ৩ জন, কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন এবং সংরতি নারী আসনে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে রয়েছেন নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত হাফিজুর রহমান হাফিজ, ধানের শীষের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব শেখ মো. মকুবল হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আব্দুল বারী খান (নারিকেল গাছ)।
আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী নওহাটা পৌর যুবলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ এবারই প্রথম মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। তিনি রয়েছেন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার প্রচারণায় প্রতিদিন অংশগ্রহণ করছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় চলছে তার প্রচারণা।
বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব শেখ মো. মকুবল হোসেন ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর এই পৌরসভার প্রথম প্রশাসক। পরবর্তীতে দুইবার (২০০৩ ও ২০১৫) সালে এই পৌরসভায় তিনি নির্বাচিত মেয়র। মাঝখানে ২০০৮ সালের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মরহুম আব্দুল গফুর সরকারের কাছে তিনি পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন আব্দুল গফুর সরকার। বর্তমানে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বর্তমান মেয়র মকবুল হোসেন।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আব্দুল বারী খান নারকেল গাছ প্রতিক নিয়ে এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হবার কারনে তাকে ইতিমধ্যে নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি এর আগে ২ বার মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন (২০০৮ ও ২০১৫)। এরমধ্যে ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ও ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করেন। বর্তমানে তিনি তার কর্মী- সমর্থকদের সাথে নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোটাররা বলছেন, এবার মেয়র পদে ৩ জন প্রার্থীই শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন ৩ জন সমান তালে। এলাকায় পোস্টার ছেড়া ও প্রচার ক্যাম্পে আগুন দেবার মত ঘটনাও ঘটতে শুরু করেছে। এতে ভোটের মাঠে দিনদিন উত্তেজনা বাড়ছে।
পৌর নির্বাচন উপলে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। পৌরসভার রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লা এখন মিছিল, স্লোগানমুখর। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধু নির্বাচন। প্রার্থীরা ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনি এলাকা। গণসংযোগের পাশাপাশি চলছে মাইকে প্রচারণা। সমানভাবে চালাচ্ছেন উঠান বৈঠক ও মাইকিং। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রার্থী, সমর্থক ও কর্মীরা যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং মন জয় করতে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
পবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রমানিক জানান, এই পৌরসভার মোট ওয়ার্ড ৯টি, সংরতি ওয়ার্ড ৩টি, ভোট কেন্দ্র ১৯টি, ভোটক ১২৪টি, ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার, ৮শ’ ৪২ জন। যারমধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার, ৬শ’ ৫৩ জন ও নারী ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার, ১শ’ ৮৯ জন।
Development by: webnewsdesign.com