রাজশাহীতে রিকশাচালকের সহযোগিতায় ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাই, ১ জন গ্রেপ্তার

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ | ৪:৩৪ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে রিকশাচালকের সহযোগিতায় ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাই, ১ জন গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো: মাসুম
apps

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকায় এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ও ছুরির আঘাত করে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত অটোরিকশা চালককে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)-এর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো: মাসুম (৩০) নওগাঁ জেলার মান্দা থানার ঠাকুর মান্দা গ্রামের মৃত ছানোয়ার শেখের ছেলে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া থানার একটি দল সোমবার দিবাগত রাতে মাসুমকে তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে আরএমপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ঘটনাটি ঘটে গত রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টায় বোয়ালিয়া থানা সংলগ্ন ঘোড়ামারা এলাকায়। ভুক্তভোগী দিলীপ কুমার প্রামানিক, যিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশার যন্ত্রাংশের দোকানে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত, সেদিন রিকশায় করে টাকা নিয়ে শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন।

দিলীপ জানান, আগের দিনের বিক্রির ১৩ লাখ টাকা তিনি মহাজনের বাসায় রেখেছিলেন এবং সেখান থেকে সেই টাকা নিয়ে রওনা দেন। মাসুমের রিকশায় চড়েই তিনি ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ রিকশাটি একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিহিত দুইজন অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেল আরোহী অটোরিকশার গতি রোধ করে তার চোখে শুকনো মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয় এবং প্রতিরোধ করতে গেলে অপরজন ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করে তার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

এসময় দিলীপ ছুরিকাঘাতের শিকার হোন কনুই ও বাম হাতের একটি আঙুল কেটে যায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে গেলেও ছিনতাইকারীরা মূল ব্যাগসহ প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর রিকশাচালক মাসুম কোনো ভাড়া না করেই সেখান থেকে পালিয়ে যান, যা তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেহ জাগায়। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলা রুজু হয়।

আরএমপির পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিনতাই টাকা উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়। মহানগরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয় এবং থানা ও টহল দলকে সতর্ক করা হয়।

পরবর্তীতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত রিকশা এবং চালককে শনাক্ত করে। পরে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার এসআই মো: শরিফুল ইসলাম ও তার টিম গত ২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি মাসুমকে তার নিজ বাড়ি মান্দা থেকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মাসুম ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ঘটনার পরপরই সে আত্মগোপনে চলে যায়। ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।

আরএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, মাসুম জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারে এবং জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং মামলাটি বর্তমানে পুলিশের বিশেষ গুরুত্বে রয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com