মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় নাজেহাল রংপুরের মানুষ। তীব্র দাবদাহের পাশাপাশি ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিয়েছে ঘরে ঘরে। এছাড়া বিদ্যুতের নাজুক অবস্থার কারণে নাকাল হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষ। শহরেও বেড়ে গেছে হাতপাখার কদর।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। প্রচণ্ড গরমে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমজীবী মানুষ মাঠে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। আবহাওয়ার এই বৈরী আচরণে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে রোগ-বালাই। গত কয়েকদিন ধরে রংপুরে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে।
রংপুর নগরীর শাহী পাড়ার দিনাজপুরের হাজি দানেশ বিশ্ববিদ্যালের শিক্ষার্থী জান্নাত জ্যোতি ঈদ উদযাপন করতে বাড়িতে এসেছেন। বাড়িতে এসে জ্বরে পড়েছেন। তার বাড়িতে আরও কয়েকজন ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে প্রচণ্ড রোদে খাঁ খাঁ করছে চারদিক। রংপুর শহরে দুপুরবেলা ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত রিকশাচালকদের লাইন ধরে গাছতলায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে।
কষ্টের সাথে রিকশাচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড রোদের কারণে রিকশায় কেউ উঠছে না। তাই আয় নেই। অপরদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, এমন আবহওয়ায় হিটস্ট্রোক, চর্মরোগসহ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংসহ গরমকে ঘিরে রংপুর শহরের ফুটপাতগুলোতে তালপাখাসহ বাঁশ, কাপড় ও সুতার তৈরি বিভিন্ন ধরনের হাতপাখার পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। ১০ টাকার হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। কয়েকদিন ধরে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন লোকজন। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদনসহ জমি তৈরিতে কৃষি শ্রমিকরা হাপিয়ে উঠেছেন প্রচণ্ড গরমে। প্রখর রোদ আর গরমের কারণে মাঠ ছিল অনেকটাই জনশূন্য। কাজ বাদ দিয়ে জীবন বাঁচাতে শ্রমজীবীসহ সাধারণ মানুষকে বাঁশঝাড় কিংবা গাছতলায় পাতানো মাচায় বিশ্রাম নিতে দেখা যায়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোদাব্বের হোসেন বলেন, হাসপাতালেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘাম ঝড়ে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি এবং ৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের এতে ঝুঁকি থাকে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ কামরুল ইসলাম বলেন, বুধবার বিকেল ৩টায় রংপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলমিয়াস। যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ।
Development by: webnewsdesign.com