যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা গ্রামের সরদার পাড়ার কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাতে নিহতের স্ত্রী সালমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির নামে মামলাটি করেন। এদিকে, নিহত মোস্তফার মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ খুনের ঘটনায় সন্দিগ্ধ হিসেবে ৪ জনকে আটকের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তারা হলো চুড়ামনকাটি গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সবজি বিক্রেতা বর্তমানে ঘোনা গ্রামে বসবাসকারী আব্দুল আহাদের দুই ছেলে চঞ্চল হোসেন ও আব্দুর রহমান, চুড়ামনকাটি জেলে পাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে সজীব হোসেন এবং চুড়ামনকাটি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ। তবে পুলিশ তাদের আটকের বিষয় অস্বীকার করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বামী গোলাম মোস্তফা একজনকাঠ ব্যবসায়ী। প্রতিদিনের মতো গত ২৪ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েবাড়ি থেকে ব্যবসায়ী কাজের উদ্দেশ্যে বের হন। আব্দুল্লাহসহ অন্য ব্যসায়ীদের কাছে যাওয়ার কথাবলেই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। সালমা বেগম তার ওষুধ কেনার জন্য সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার (গোলাম মোস্তফা) ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ফোন করেন। এসময় মোস্তফার ফোনসেট বন্ধ পাওয়া যায়। এভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত তার স্বামীর নম্বরে ফোন করে বন্ধ পান সালমা বেগম। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফোন করলে রিং হয় কিন্তু কেউ রিসিভ করেনা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পরিবারের আরেক সদস্যের ফোন দিয়ে গোলাম মোস্তফার নম্বরে রিং করলে রিসিভ করে কিন্তু কোন কথা বলেনা। তবে পাশ থেকে ছোট শিশুদের কথা শোনা গিয়েছিল। সাড়ে ৯টার দিকে লোক মারফত জানতে পারেন কাশিমপুর ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের জনৈক চিত্ত বাবুর মেহগনিবাগানের দক্ষিণ পাশে বুড়ি ভৈরব নদে একটি মরদেহ ভেসে আছে। এরপর তার ছোট ছেলে হাবিবুর রহমান প্রতিবেশি তানভীর হোসেন রক্সির মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন গোলাম মোস্তফার লাশ।
এরই মধ্যে খবর পেয়ে কোতয়ালি থানা এবং সাজিয়ালি ক্যাম্পের পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। লাশের গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করা ছিল।
গত রোববার এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে চঞ্চল, আব্দুর রহমান, সজিব হোসেন ও মোস্তফার ব্যবসায়ী পার্টনার আব্দুল্লাহকে পুলিশ আটক করে বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। চঞ্চলের কাছ থেকে নিহত গোলাম মোস্তফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়েছে। তার স্বজনরা জানিয়েছেন, রোববার সকালে চুড়ামনকাটি- কাশিমপুর সড়কের শহিদের ইটভাটা সংলগ্ন কালভার্টের কাছে ওই মোবাইল ফোনটি কুড়িয়ে পায় চঞ্চল।
এলাকার কয়েকজন সেখানে মোবাইল ফোনটিও পড়ে থাকতেও দেখেছিলো। বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আপাতত কোন তথ্য দিতে রাজি হয়নি। যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে বলেছেন, পুলিশ এই মামলাটি নিয়ে কাজ করছে। খুব তাড়াতাড়ি একটি রেজাল্ট আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
Development by: webnewsdesign.com