মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দৈনিক সংগ্রামের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠিত

সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১১:১১ পূর্বাহ্ণ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দৈনিক সংগ্রামের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠিত
apps

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের হলরুমে দৈনিক সংগ্রামের কমলগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি আবদুল হাই ইদ্রিছী’র সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক নির্মল এস পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম শেফুল, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব আহবায়ক এম এ ওয়াহীদ রুলু। বক্তব্য রাখেন ভানুগাছ বাজার বণিক কল্যাণ সমিতিব সহসভাপতি কাজী মামুনুর রশীদ, দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি এস কে দাশ, দৈনিক ইত্তেফাকের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি সৈয়দ সায়েদ আহমদ, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি প্রণীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি সাব্বির এলাহী, দৈনিক এশিয়া বাণী প্রতিনিধি জালাল চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে দৈনিক সংগ্রাম প্রতিনিধির হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর ও কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন দৈনিক সংগ্রাম যে আদর্শ ও নীতি নিয়ে প্রকাশনার যাত্রা শুরু করেছিল শত বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও গত ৫০ বছরে সে আদর্শ ও নীতি থেকে একটুও বিচ্যুত হয়নি। তারা পত্রিকার বহুল প্রচার ও সফলতা কামনা করেন।

 

ঝালকাঠিতে চাঁদা না দেওয়ায় রাজমিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির রাজাপুরে চাঁদা না দেওয়ায় আবুল বাশার (৫০) নামে এক রাজমিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সাউথপুর গ্রামে (শুক্কুরের চায়ের দোকান) এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসার এক পর্যায়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আবুল বাশার ওই এলাকার মৃত মুক্তিযোদ্ধা তানজের আলী চৌকিদারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল মোল্লা ও নিহতের মামা রেজাউল করিম জানায়, গত উপজেলা নির্বাচনের সময় ইন্দ্রপাশা এলাকার মোঃ পান্নু খানের ছেলে মোঃ নাজমুল হাসান (২৮) সঙ্গে বশারের বিভেদ ছিলো, তারই জের ধরে বশারের কাছে নাজমুল টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে কয়েকদিন ধরে। সন্ধ্যার সময় দক্ষিণ সাউথপুর ৬৬নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন শুক্কুরের চায়ের দোকানে বসে আবুল বাশার চা খেয়ে দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তায় বসে মোবাইলে কথা বলে হঠাৎ বাইকে করে নাজমুল এসে বাশারের কাছে টাকা চাইলে বাশার টাকা না দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। বাশার আমাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে ডাক চিৎকার ও দৌড় দিয়ে শুক্কুরের দোকানে উঠে সুয়ে পরে। এরপর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজাপুর হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত্যু ঘোষণা করেন।

রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ তমাল হালদার বলেন, আবুল বাশারের ডান হাতে, বাম কাঁধের পিছনের দিকে, পেটে ও বুকে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্রে আঘাত ছিলো ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তার মৃত্যু হয়েছে।

রাজাপুর থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে আমিসহ ফোর্স হাসপাতালে এসেছি মরদেহের সুরাতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হবে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রকৃয়াধীন।

ক্যাপশনঃ নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে কান্না করছে।

ক্যাপশনঃ নীল শার্ট পড়া নিহত আবুল বাশার। কালো জ্যাকেট পড়া হত্যাকারী নাজমুল।

 

আনচেলত্তি রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন

পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে দৌড় দিলেন কিলিয়ান এমবাপে। তাকে থামাতে পেছনে থেকে মারাত্মক ট্যাকেল করলেন কার্লোস রোমেরো। পড়ে গিয়ে কয়েকটি ডিগবাজি খেলেন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ড। ভয়াবহ এমন চ্যালেঞ্জের পর এস্পানিওল ডিফেন্ডারকে হলুদ কার্ড দেখালেন রেফারি।

সিদ্ধান্তটি মোটেও পছন্দ হয়নি কার্লো আনচেলত্তির। রোমেরোকে লাল কার্ড না দেখানোরও কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না রিয়াল কোচ। ম্যাচ শেষে তাই তার কণ্ঠে ঝরল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

আনচেলত্তির মতে, ম্যাচের ৬১তম মিনিটে রোমেরোর ওই ট্যাকেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতেন এমবাপে। বিশ্বকাপ জয়ী ফরাসি ফরোয়ার্ড চোট পেলে তা রিয়ালের জন্য হতো বড় ধাক্কা। তবে গুরুতর কিছু না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন আনচেলত্তি।

এমবাপে ফাউল করা রোমেরোই পরে গড়ে দেন ব্যবধান। ৮৫ মিনিটে তার দারুণ ফিনিশিংয়ে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে এস্পানিওল। ম্যাচ শেষে সব মিলিয়েই তাই রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আনচেলত্তি।

তিনি বলেন, “ফাউল ব‍্যাখ‍্যাতীত, রেফারি ও ভিএআর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাও তাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খেলোয়াড়ের যত্ন নেওয়া এবং তাকে রক্ষা করা। এটা খুব বাজে ট্যাকল ছিল, যাতে চোটের ঝুঁকি ছিল। সৌভাগ্যক্রমে তেমন কিছু ঘটেনি।

সেই ট্যাকেলটি যে বাজে ছিল, মেনে নিয়েছেন রোমেরোও। এর জন্য এমবাপের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি জানতাম যে, দৌড়ের মধ্যে থাকা এমবাপেকে থামানো অসম্ভব। তাকে থামানোর জন্য যা করার সেটাই আমি করেছি। চ্যালেঞ্জটি কিছুটা বাজে ছিল। আমার নিজেরই ভালো লাগেনি। আমি তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি।

 

ইংল্যান্ড অভিষেক ঝড়ের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না

বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে অভিষেক শর্মা উপহার দিলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। তাতে যে উচ্চতায় উঠল ভারতের স্কোর, তার ধারেকাছে যেতে পারল না ইংল্যান্ড। পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে ১৫০ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ২০ ওভারে ভারত করে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান। জবাবে ১০.৩ ওভারে ইংলিশরা গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৭ রানে। ১৩ ছক্কা ও ৭ চারে ৫৪ বলে ১৩৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যাচের নায়ক অভিষেক শর্মা।।

এই সংস্করণে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই। ২০২৩ সালে আহমেদাবাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুবমান গিলের অপরাজিত ১২৬ ছিল আগের সেরা। বাঁহাতি অভিষেকের ১৩ ছক্কাও ভারতের রেকর্ড। এর আগে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১০টি করে ছক্কা ছিল রোহিত শার্মা, সাঞ্জু স্যামসন ও তিলক ভার্মার।

২৪ বছর বয়সী অভিষেক এ দিন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৭ বলে। ভারতের হয়ে যা দ্বিতীয় দ্রুততম, পূর্ণ সদস্য দুটি দলের মধ্যে ম্যাচেও দ্বিতীয় দ্রুততম। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার, একই বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সমান বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন রোহিত। পরে এক ওভার বোলিং করে ৩ রানে ২টি উইকেটও নেন অভিষেক। ম্যাচ-সেরার লড়াইয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ ছিল না।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ দিয়ে ১৩ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে উইকেটশূন্য থাকলেও, শেষ ম্যাচে ২৫ রানে ৩ শিকার ধরেন অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শামি। ইংল্যান্ডের অর্ধেকের বেশি রান একাই করেন ফিল সল্ট। ২৩ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রান করেন এই ওপেনার। আর কেউ ১০ ছাড়াতে পারেননি।

ভারত ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। প্রথম ওভারে জফ্রা আর্চারকে দুইটি ছক্কা ও একটি চারে ১৬ রান নেওয়া স্যামসন বিদায় নেন ওই স্কোরেই। আর্চারের পরের ওভারে একটি চার ও দুইটি ছক্কায় শুরু হয় অভিষেক শর্মার তাণ্ডব।

জেমি ওভারটনকে পরপর দুই ছক্কায় পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তিনি মাত্র ১৭ বলে। তার সঙ্গে রান উৎসবে যোগ দেন তিলকও। ভারত প্রথম ৬ ওভারে করে ১ উইকেটে ৯৫। ২০২১ সালে দুবাইয়ে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে ৮২ ছাড়িয়ে পাওয়ার প্লেতে তাদের সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। তিলকের বিদায়ে ভাঙে ৪৩ বলে ১১৫ রানের বিস্ফোরক জুটি, যেখানে তার অবদান কেবল ১৫ বলে ২৪।

অভিষেকের রান ছিল একসময় ৩১ বলে ৯৪। রোহিতের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তিনি ভেঙে দেবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছিল তখন। তবে পরের ৬ রান করতে তিনি খেলেন আরও ৬ বল। সেঞ্চুরির পথে তিনি ছক্কা মারেন ১০টি, পরে বল উড়িয়ে সীমানার বাইরে পাঠান আরও তিনবার।

আগের ম্যাচে যার ‘কনকাশন বদলি’ নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক, সেই শিভাম দুবে এদিন ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৩ বলে করেন ৩০ রান। হার্দিক পান্ডিয়া, রিঙ্কু সিং প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি। দলের স্কোর ২৩৭ রানে নিয়ে অভিষেক শর্মা বিদায় নেন অষ্টাদশ ওভারের শেষ বলে।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের প্রথম তিন বলে শামিকে দুইটি চার ও একটি ছক্কায় শুরু করেন সল্ট। শামি পরের ওভারে এসে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন বেন ডাকেটকে। এরপর এক প্রান্তে চলতে থাকে জস বাটলার, হ্যারি ব্রুকদের আসা-যাওয়ার মিছিল। অন্য প্রান্ত আগলে রেখে সল্ট ফিফটি পূর্ণ করেন ২১ বলে।

অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম ডেলিভারিতে সল্টের ঝড় থামান শিভাম। পরের ওভারে তিনি বিদায় করেন জ্যাকব বেথেলকেও। পরপর দুইটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দেন শামি। এখন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দুই দল। আগামী বৃহস্পতিবার নাগপুরে হবে প্রথমটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ২৪৭/৯ (স্যামসন ১৬, আভিশেক ১৩৫, তিলাক ২৪, শিভাম ৩০, পান্ডিয়া ৯, রিঙ্কু ৯, আকসার ১৫, শামি ০*, বিষ্ণই ০; আর্চার ৪-০-৫৫-১, উড ৪-০-৩২-২, ওভারটন ৩-০-৪৮-১, লিভিংস্টোন ২-০-২৯-০, রাশিদ ৩-০-৪১-১, কার্স ৪-০-৩৮-৩)

ইংল্যান্ড: ১০.৩ ওভারে ৯৭ (সল্ট ৫৫, ডাকেট ০, বাটলার ৭, ব্রুক ২, লিভিংস্টোন ৯, বেথেল ১০, কার্স ৩, ওভারটন ১, আর্চার ১*, রাশিদ ৬, উড ০; শামি ২.৩-০-২৫-৩, পান্ডিয়া ২-০-২৩-০, ভারুন ২-০-২৫-২, বিষ্ণই ১-০-৯-১, শিভাম ২-০-১১-২, আভিশেক ১-০-৩-২)

ফল: ভারত ১৫০ রানে জয়ী।

সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জয়ী ভারত।

ম্যান অব দা ম্যাচ: অভিষেক শর্মা।

ম্যান অব দা সিরিজ: বরুন চক্রবর্তি।

 

 

ইউনাইটেড বিবর্ণ ফুটবলে ঘরের মাঠে হারল

নিজ আঙিনায় ব্যর্থতার জাল ছিড়তেই পারছে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মৌসুমের মাঝপথে বদল হয়েছে কোচ। এরিক টেন হ্যাগকে সরিয়ে রুবেন আমোরিমকে কোচ করা হয়েছে। তরুণ মুখকে কোচ করা হলেও ধারাবাহিকতা আসছে না। এবার ঘরের মাঠে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হেরে আরও তলানিতে গেল রেড ডেভিলসরা।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে রবিবার বিবর্ণ ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারায় প্যালেস। ফরাসি ফরোয়ার্ড জ‍্যঁ ফিলিপ মাতেতা দুটি গোলই করেন দ্বিতীয়ার্ধে। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছিল ইউনাইটেড। গত ম্যাচে তারা এই মাঠেই ব্রাইটনের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে হেরেছিল। ফলে এই ম্যাচে কামব্যাক করবে বলে আশা ছিল। কিন্তু সে গুড়ে বালি। ৩-১ গোলে হারের পর বদলা নেওয়া তো দূরের কথা, ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে ২-০ গোলে হারতে হলো। সঙ্গে সমর্থকদের আরও একটা হতাশার রাত উপহার দিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেসরা।

ইউনাইটেড শুরু থেকে গোলের জন্য ঝাঁপায়। ১৭ মিনিটে তারা প্রথম সুযোগ তৈরি করে। গোল লক্ষ্য করে প্রথম শট নেয়। কিন্তু শট নিলেই তো হবে না, গোল করতে হবে। সেটা আসেনি। পুরো নব্বই মিনিটে ইউনাইটেড মাত্র দুটি শট গোল লক্ষ্য করে নেয়। মোট শট ১৭টি। যারমধ্যে গোলে রইলো মাত্র ২টি। অন্যদিকে ক্রিস্টাল প্যালেস মোট ১১টি শট নেয় ও গোলে থাকে ৩টি এবং গোল আসে দুটি।

বলের দখল ইউনাইটেডের কাছে ৬৭ শতাংশ থাকলেও আসল কাজটা করতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধে ক্রিস্টাল প্যালেস বেশ কয়েকটা ভালো সুযোগ তৈরি করে। গোল পায়নি। অবশেষে ৬৪ মিনিটে তারা প্রথম গোল পায়। ইউনাইটেড গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার মাথার উপর দিয়ে বল ক্রসবারে লেগে ফিরে যায়। মাতেতা ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন।

গোল খেয়ে ইউনাইটেড শোধ করার জন্য পাল্টা লড়াই করে। কিন্তু গোলের সামনে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল। এই টানা ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয় লিসান্দ্রো মার্তিনেসের চোট। এতে ক্রিস্টাল প্যালেসের আরও সুবিধা হয়। ৮৯ মিনিটে সেই মাতেতা শেষ গোলটি করেন।

চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে এই নিয়ে ঘরের মাঠে মোট ৭টা ম্যাচে হারল ইউনাইটেড। ২৪ ম্যাচে ৮টা জিতে, ৫টা জিতে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় রইল ১৩ নম্বর স্থানে।

 

 

বার্সেলোনা কষ্টার্জিত জয়ে লিগ জমাল

টানা চার ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর পর টানা দ্বিতীয় জয় পেলো বার্সেলোনা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অলিম্পিক স্টেডিয়ামে লা লিগার ম্যাচে আলাভেসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে কাতালনরা। ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেছেন লেভানডোভস্কি।

স্তাদিও অলিস্পিক লুইস কোম্পানিসে পাওয়া বার্সার এই জয় লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে নিয়ে এসেছে নতুন রোমাঞ্চ। বর্তমানে ২২ ম্যাচ খেলে সবার ওপরে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট ৪৯। সমান ম্যাচে বার্সার পয়েন্ট এখন ৪৫। আর দুইয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ২২ ম্যাচে ৪৮। অর্থাৎ শীর্ষে থাকা রিয়ালের চেয়ে বার্সা এখন পিছিয়ে আছে ৪ পয়েন্টে। আর আতলেতিকোর সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান ৩। পয়েন্ট তালিকার এমন চিত্র সামনের দিনগুলোয় লা লিগায় হাড্ডাহাড্ডি শিরোপা লড়াইয়েরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ঘরের মাঠে বার্সা অবশ্য জয়টা একেবারেই অনায়াসে পায়নি। ম্যাচজুড়ে বলের দখল ও আক্রমণে বার্সা এগিয়ে থাকলেও, সুযোগ তৈরি করতে বেগ পেতে হচ্ছিল স্বাগতিক আক্রমণভাগকে।

এর মধ্যে চোট নিয়ে ম্যাচের শুরুতে গাভি মাঠ ছাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ বার্সার জন্য। প্রথমার্ধে ধুঁকতে থাকা বার্সা তো একটির বেশি লক্ষ্যে শটও নিতে পারেনি। এ সময় আলাভেসের রক্ষণও ছিল বেশ দৃঢ়। বিরতির পর গোলের জন্য আরও মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে বার্সা। শেষ পর্যন্ত বার্সা স্কোর করে ম্যাচের ৬১ মিনিটে। লেভানডোফস্কির ভলিতে লিড নেয় কাতালানরা। এবারের লিগে পোলিশ তারকার এটি ১৭তম গোল। এগিয়ে যাওয়ার পর গোলের আরও কিছু সুযোগ তৈরি করে বার্সা।

কিন্তু কোনোটাই ব্যবধান বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। অন্য দিকে প্রথমার্ধে কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারা আলাভেস দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকবার আক্রমণে গিয়েছিল, যদিও তাতে সমতা ফেরাতে পারেনি দলটি। শেষ পর্যন্ত স্বস্তির এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে হান্সি ফ্লিকের দল।

 

ইন্টার মিলান ড্র করলো এসি মিলানের সঙ্গে

ম্যাচের একেবারে শেষ সময়ের গোলে হার এড়িয়েছে ইন্টার মিলান। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে এসি মিলান ও ইন্টার মিলানের লড়াইটা ছিলো দুর্দান্ত। তিনবার জালে বল পাঠিয়েও ইন্টার মিলান গোল পেল না অফসাইড আর ফাউলের কারণে। তাদের তিনটি প্রচেষ্টা বাধা পেল পোস্টেও। আরেকটি ডার্বি জয়ের দুয়ারে যখন এসি মিলান, তখনই রোমাঞ্চে ঠাসা লড়াইয়ে নাটকীয় মোড়। ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটে সমতা টানেন ইন্টারের স্টেফান ডি ভ্রেই।

সান সিরোয় রবিবার রাতে সেরি আর ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। প্রথমার্ধে টিয়ানি রেইন্ডার্স এসি মিলানকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৯৩তম মিনিটে সমতা টানেন স্টেফান ডি ভ্রেই। গত সেপ্টেম্বরে দুই দলের প্রথম দেখায় ২-১ গোলে জিতেছিল এসি মিলান, চলতি আসরে ইন্টারের একমাত্র হার সেটিই।

এবারের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে ফেদেরিকো দিমার্কো ও লাউতারো মার্তিনেস এসি মিলানের জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি।

৪২তম মিনিটে ‘ডেডলক’ ভাঙেন রেইন্ডার্স। রাফায়েল লেয়াওয়ের কোনাকুনি শট গোলরক্ষক ঠেকানোর পর ফিরতি বল ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে জালে পাঠান ডাচ মিডফিল্ডার।

৬৪তম মিনিটে আরেকবার বল জালে পাঠান বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মার্তিনেস। এবার ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। ৬৭তম মিনিটে ডিফেন্ডার ইয়ান বিসেকের হেড, ৮২তম মিনিটে মার্কাস থুরামের ভলি ও যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিসের শট; ইন্টারের তিনটি প্রচেষ্টাই বাধা পায় একই পোস্টে!

অবশেষে পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোলের দেখা পায় ইন্টার। সতীর্থের ক্রসে দূরের পোস্টে ডিফেন্ডার নিকোলা জালেবস্কি বুক দিয়ে নামিয়ে বল দেন আরেক ডিফেন্ডার ডি ভ্রেইকে, বাঁ পায়ের শটে গোল করে দলকে উল্লাসে ভাসান তিনি।

২২ ম্যাচে ১৫ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে ইন্টার মিলান। সমান ম্যাচে ৯ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে আছে এসি মিলান। ৫৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে নাপোলি।

 

 

Development by: webnewsdesign.com