শীঘ্রই হতে যাচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল। এর মাধ্যমে গঠিত হবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি, জেলায় আসবে নতুন নেতৃত্ব। কমিটির শীর্ষ দুটি পদে (সভাপতি-সম্পাদক) প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে এতদিন ৪-৫ জনের নাম শুনা গিয়েছিলো। তবে এবার চমক সৃষ্টি করে সভাপতি পদে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন ওঠেছে। তিনি স্থানীয় বিএনপিতে ক্যারিশমাটিক রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। জেলা বিএনপির সভাপতি পদে তাঁর প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জনে দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয়েছে নতুন হিসাব-নিকাশ।
৩ মাসের মেয়াদ দিয়ে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর ২৫ সদস্য বিশিষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। কমিটিতে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করা হয় এবং ১ নম্বর সদস্য করা হয় সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমকে। কিন্তু ৩ মাসে তো হয়-ই-নি, দুই বছর পেরিয়ে সেই ‘অস্থায়ী কমিটি’ পা রেখেছে ৩ বছরে। তবে এবার সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শীঘ্রই হতে যাচ্ছে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। আগামী মাসের (মার্চের) প্রথম সপ্তাহে জেলা বিএনপির কাউন্সিল হওয়ার কথা রয়েছে। সে কাউন্সিল জেলা বিএনপিতে এনে দেবে নতুন নেতৃৃত্ব।
জানা যায়, সম্প্রতি ধারাবাহিকভাবে জেলা কমিটির আওতাধীন ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেছেন নেতৃবৃন্দ। আর ৫টি পৌরসভার সবকটিরই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে ইতোমধ্যে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি থাকা ৪টি উপজেলায়ও কমিটি গঠন করা হবে। এর আগে উপজেলাগুলোতে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়।
সিলেট জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, উপজেলাগুলো গুছানো হয়ে গেলে আর দেরি নয়- আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই কাউন্সিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে শাখাটি। এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব চলে আসবে জেলা বিএনপিতে।
এদিকে জেলা বিএনপির সর্বোচ্চ পদ (সভাপতি) নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা- কল্পনা আর নানা গুঞ্জন। কে হচ্ছেন জেলার সভাপতি? এমন প্রশ্নে নেতাকর্মীদের আলোচনায় এবার চলে এসেছে চারজনের নাম। তারমধ্যে প্রথমজন হচ্ছেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক চৌধুরী। একসময় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সিলেট মহানগর থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কমিটিতে। এবার জেলা কমিটির সভাপতি হবার দৌঁড়ে তাঁর নাম তালিকার উপরদিকে চলে আসায় পাল্টে গেছে নেতাকর্মীদের হিসেব-নিকেশ। নতুন সমীকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দলটির এক সূত্র জানায়, মেয়র আরিফ এখনও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা না দিলেও তাঁর ঘনিষ্টজনরা বলছেন- তৃণমূলের প্রস্তাব ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হতে যাচ্ছেন তিনি। নতুন উপজেলা ও পৌরকমিটিগুলোর নেতৃৃবৃন্দ এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করে দিয়েছেন। আগামী কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যতিব্যস্ত সময় পার করছেন আরিফুল হক। এতদিন দলীয় কার্যক্রমে খুব একটি সক্রিয় দেখা না গেলেও জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সরব হয়ে ওঠেছেন স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা। জেলার সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে তাঁর প্রতি ইতিবাচক মনোভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে। মেয়র আরিফকে জেলা বিএনপির শীর্ষ পদটিতে দেখা গেলে দলের কার্যক্রম এবং সকল কর্মসূচি পালনে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়াও সভাপতি প্রার্থী হওয়ার তালিকায় প্রাথমিকভাবে রয়েছে আরও তিনজনের নাম। তারা হচ্ছেন- জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক।
Development by: webnewsdesign.com