মানুষের জীবন বাঁচানোর পেশায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি। মৃত্যুর পরও ধরে রেখেছেন সেই কাজ। নিজের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ৪ জনকে দিয়েছেন নতুন জীবন। দান করে গেছেন নিজের হার্ট, কিডনি ও লিভার।
তার নাম অমিয়ভূষণ সরকার। থাকতেন ভারতের পূর্ব মেদিনীপুরে। সেখানকার একটি সরকারি হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন এই চিকিৎসক।
জানা গেছে গত ২২ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান নিউটাউনের এই বাসিন্দা। দুর্ঘটনার পরদিন থেকেই ভর্তি ছিলেন স্থানীয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। সোমবার (২৬ এপ্রিল) তাকে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
অমিয়ভূষণ সরকারের ছেলেও একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। বাবার মৃত্যুর পর ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমার বাবার ধর্মই ছিল মানবসেবা। ছোটবেলা থেকে বাবা আমায় এটাই শিখিয়েছেন। তাই বাবার অঙ্গগুলো আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়ে যাক এমনটা আমরা চাই না।
সাধারণত অঙ্গদান করতে গেলে অঙ্গদাতার সঙ্গে গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করতে হয়। অমিয়ভূষণের শরীরের রক্ত ছিল বিরল এবি পজিটিভ গ্রুপের। ফলে দ্রুত একই ব্লাড গ্রুপের রোগী জোগাড় করাই ছিল চ্যালেঞ্জ। রিজিওনাল অর্গান টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন (ROTTO) এবং ন্যাশনাল অর্গান টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন (NOTTO) যৌথভাবে খোঁজ শুরু করে। অবশেষে সত্যি হয় অমিয়ভূষণের স্বপ্ন।
প্রাত ১৩শ’ কিলোমিটার দূরের গুরগাঁওতে খোঁজ মেলে এক লিভার বিকল হয়ে পড়ে থাকা রোগীর। কলকাতা থেকে আকাশপথে গুরগাওয়ের এক হাসপাতালে পৌঁছেছে লিভার। গ্রিন করিডোর করে অমিয়ভূষণের দুটি কিডনি গেছে কলকাতার কমান্ড হাসপাতাল এবং আরএনটেগোর হাসপাতালে।
অন্যদিকে হার্ট নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাওড়ার নারায়ণা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে ৩০ বছরের এক যুবকের শরীরে বসছে হার্টটি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর ওই যুবক ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথির শিকার। তার হার্ট সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গিয়েছিল। ডা. দেবাশিস দাস, ডা. নীলাঞ্জন দত্ত, ডা. প্রদীপ নারায়ণের তত্ত্বাবধানে হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের অস্ত্রোপচার হয়।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
Development by: webnewsdesign.com